
ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, চাঁদাবাজদের থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন। চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিএনপি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। দলীয় পরিচয় দিয়ে কেউ অপরাধ করলে তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
শনিবার (৩১ মে) বিকাল ৫টায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ডেমরা থানা বিএনপির উদ্যোগে হাজীনগর সেবা হাসপাতালের সামনে আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. রিপন বলেন, বিএনপি কখনও অপরাধীদের আশ্রয়স্থল ছিল না, আর হবেও না। যারা এসব অপরাধে জড়াবে, তাদের কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। আওয়ামী লীগ আমলে রাজনীতির সঙ্গে অপরাধ মিশে গিয়েছিল, কিন্তু বিএনপি সেই অধ্যায়ের ইতি টানতে চায়।
তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, রাজনীতি সেবার জন্য, সুবিধা নেওয়ার জন্য নয়। আদর্শের সৈনিক হও, অপরাধ থেকে দূরে থাকো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশেষ সহকারী, চেয়ারপার্সনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি বিএনপি জ্যেষ্ঠ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ্ব নবীউল্লাহ নবী।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ডেমরা থানা বিএনপির আহ্বায়ক পদপ্রার্থী মো. সেলিম রেজা এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব পদপ্রার্থী মো. আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানে ডেমরা থানা বিএনপি, ওয়ার্ড বিএনপি এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দর্শন ছিল জাতির জাগরণ। তিনি কৃষককে মর্যাদা দিয়েছেন, শ্রমিককে দিয়েছেন অধিকার, আর তরুণদের হাতে তুলে দিয়েছেন আত্মমর্যাদার স্বপ্ন। তিনি ছিলেন এক সাহসী মুক্তিযোদ্ধা, দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের রূপকার। তাঁর দেশপ্রেম, আদর্শ ও নেতৃত্বে বাংলাদেশ পেয়েছিল নতুন দিকনির্দেশনা।
তিনি আরও বলেন, একটি রাষ্ট্রের প্রকৃত দায়িত্ব হলো জনগণের কল্যাণে নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করা। শহীদ জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দর্শনের কেন্দ্রে ছিল এই আদর্শ—যেখানে জনগণই রাষ্ট্রের মূল চালিকা শক্তি। তাঁর জীবনদর্শন, ত্যাগ ও নেতৃত্ব নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, যেন তারা সত্যিকারের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার মূল্য বুঝতে শেখে।
নবীউল্লাহ নবী বলেন, আমরা চাই ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে দ্রুত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আপনি আপনার সুনাম অক্ষুণ্ন রাখুন। এ দেশের মানুষ অনেক আশা নিয়ে এক সময় একটি স্বৈরাচার সরকার পতন ঘটিয়েছিল ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার আশায়। আমরা চেয়েছিলাম, সরকার সম্মান রক্ষা করে শান্তিপূর্ণভাবে বিদায় নেবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখন দেখা যাচ্ছে, আপনি (সরকার) নির্বাচন না দিয়ে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। আমরা চাই না আপনার বিদায় কলঙ্কময় হোক। সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিন। তাই আমরা আগামী ডিসেম্বরে একটি গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জোর দাবি জানাচ্ছি, যাতে জনগণের রায় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় এবং দেশে গণতন্ত্র পূর্ণভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
সেলিম রেজা ও মো. আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ৩০ মে একটি শোকাবহ ও গভীর বেদনার দিন। এ দিনে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে, যাঁর রক্তে লেখা বাংলাদেশের ইতিহাস আজও চিরভাস্বর। তাঁরা বলেন, এই শাহাদাত বার্ষিকী শুধু শোকের নয়, বরং জাতীয় সংকল্পের দিন—জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয়ে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। এই অবিস্মরণীয় নেতার আদর্শ ও ত্যাগ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠান শেষে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
ইমরান