ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পুলিশ নিয়োগে সুখবর, পদোন্নতিতে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে যা জানা গেলো

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ১৭ মে ২০২৫

পুলিশ নিয়োগে সুখবর, পদোন্নতিতে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে যা জানা গেলো

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তনের চিন্তা করছে। বর্তমানে তিন স্তরে নিয়োগ দেওয়া হলেও, ভবিষ্যতে এটি দুই স্তরে সীমিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনার অধীনে, উপপরিদর্শক (এসআই) পদে সরাসরি নিয়োগ বন্ধ করে শুধুমাত্র কনস্টেবল বা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। উচ্চপদে নিয়োগ শুধুমাত্র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে হবে।

পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, এই প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই ও পরীক্ষা–নিরীক্ষা চলছে। জেলা পুলিশের মতামত সংগ্রহের জন্য একটি প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছে এবং মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই পরিবর্তনের লক্ষ্য হলো বিভিন্ন পদের পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দীর্ঘদিনের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব নিরসন, পদোন্নতির জটিলতা দূর করা এবং পেশাগত উৎকর্ষ বৃদ্ধি করা।

বর্তমানে, পুলিশ বাহিনীতে তিন স্তরে চার ক্যাটাগরিতে সদস্য নিয়োগ করা হয়:

  • প্রথম স্তরে ১৭তম গ্রেডে কনস্টেবল,

  • দ্বিতীয় স্তরে ১০ম গ্রেডে এসআই (নিরস্ত্র) ও সার্জেন্ট,

  • তৃতীয় স্তরে নবম গ্রেডে এএসপি।

এই নিয়োগপদ্ধতি পরিবর্তন করে দুই স্তরে সীমিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে কনস্টেবলদের ১৭তম গ্রেডের পরিবর্তে ১৬তম গ্রেড প্রদান এবং ভবিষ্যতে সরাসরি এএসআই পদে নিয়োগ দেওয়ার চিন্তাও রয়েছে। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে কনস্টেবলরা যোগ্যতা অনুযায়ী এএসপি বা তদূর্ধ্ব পদ পর্যন্ত পদোন্নতি পেতে পারবেন।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম জানান, পুলিশ সদস্যদের নিয়মিত পদোন্নতি, মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব ঘোচানো এবং মামলার তদন্তের জন্য শুরু থেকেই সব পর্যায়ের সদস্যদের প্রস্তুত করতে কাজ করছে পুলিশ। এই প্রস্তাব পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, "উপমহাদেশের বাস্তবতায় কনস্টেবল পদে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকেরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন না। কনস্টেবলদের কাজগুলো করার ক্ষেত্রেও তাঁদের মধ্যে অস্বস্তি থাকতে পারে। দুই স্তরের নিয়োগের চিন্তা করলে নিচের সর্বনিম্ন পদের নাম ও বেতন স্কেলে পরিবর্তন আনা জরুরি। তা না হলে নিচের ধাপে যোগদানে মেধাবীরা নিরুৎসাহিত হতে পারেন। সব দিক বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।"

এই প্রস্তাবের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে, যা সদস্যদের মধ্যে সমতা ও পেশাগত উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আলীম

×