
বিএনপির কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে ছাত্রদলের সদ্যঘোষিত দক্ষিণ জেলা ও মহানগর কমিটির পদবঞ্চিতরা। শনিবার (১৭ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে ওই কার্যালয়ের সামনে নানা স্লোগান দিয়ে কার্যালয়টির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। তবে আগুন আশপাশে ছড়িয়ে পড়ার আগেই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে কার্যালয়টির ভেতরের কিছু আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশের ব্যবসায়ীরা জানান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারে শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা কান্দিরপাড়ে মিছিল বের করে। এসময় বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। কার্যালয়টির ভেতরে আসবাবপত্র ভাংচুর করার পর আগুন দিয়ে বিক্ষোভকারীরা ‘অবৈধ কমিটি মানি না মানবো না, জ্বালোরে জ্বালো আগুন জ্বালো, এ্যাকশন টু এ্যাকশন ডাইরেক্ট এ্যাকশন’ স্লোগান দিতে থাকে। কিছু সময় তারা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দিয়ে ফেরার পথে আবারো বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া কয়েকজন জানান, বিগত ১৭ বছরে যারা আওয়ামী লীগের দ্বারা নির্যাতন ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে তা আমরা মানি না। কমিটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাদের সমন্বয়ে যতোক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
ছাত্রদলের নেতারা বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে কাজী জোবায়ের আলম জিলানীকে সভাপতি ও এমদাদুল হক ধীমানকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল এবং নাদিহ রানাকে সভাপতি ও ফায়াজ রশিদ প্রিমুকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর ছাত্রদলের আংশিক ওই দুটি কমিটি করা হয়।
ওই রাতেই দুই কমিটিতে পদবঞ্চিতরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠে এবং নগরীর কান্দিরপাড়ে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা পূবালী চত্বরে ঘন্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে। তারা সদ্যঘোষিত কমিটির বিলুপ্তির দাবিতে শনিবার সন্ধ্যায় ফের বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সদ্যবিদায়ী সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠু সাংবাদিকদের বলেন, কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা গত তিন দিন যাবত দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে আসছিল। এরই মাঝে পদপ্রাপ্ত এবং পদবঞ্চিতদের মাঝে সংঘর্ষে রূপ নেয়। তবে বিএনপির কার্যালয়ে কারা অগ্নিসংযোগ করেছে সেটা আমার জানা নেই।
রাতে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু সাংবাদিকদের বলেন, কার্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। সম্প্রতি আমরা এ অফিস সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে ছিলাম। ভেতরে কারা আগুন দিয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারিনি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ এবং কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তারপরও বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কারা এ ঘটনা করেছে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রিফাত