ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বর্তমান সরকার হচ্ছে এনসিপি সরকার, কেয়ামত পর্যন্ত সমর্থন দেবে না জনগণ: সালাহউদ্দিন

প্রকাশিত: ২১:১২, ১৭ মে ২০২৫; আপডেট: ২১:১৪, ১৭ মে ২০২৫

বর্তমান সরকার হচ্ছে এনসিপি সরকার, কেয়ামত পর্যন্ত সমর্থন দেবে না জনগণ: সালাহউদ্দিন

ছ‌বি: সংগৃহীত

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বর্তমান সরকার জনগণের নয়, এটি একটি "এনসিপি মার্কা সরকার" হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “রোজ কেয়ামত পর্যন্ত আপনাদেরকে জনগণ এই জায়গায় দেখতে চাইবে না।”

তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার সাংবিধানিক কাঠামোর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হলেও তারা নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

শনিবার এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে এনসিপি সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত দুই উপদেষ্টা রয়েছেন, যারা প্রকাশ্যে সংগঠনের সাথে যুক্ত না থাকলেও পর্দার আড়ালে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এটি একটি ওপেন সিক্রেট বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ অবস্থায় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হলে ওই দুইজন উপদেষ্টার পদত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে কিংবা তাদের সরিয়ে দিতে হবে বলে দাবি জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, “আপনার সরকারে একজন বিদেশি নাগরিককে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করা হয়েছে। আপনার কি এতটুকু জ্ঞান নেই যে, দেশের সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য একজন বিদেশির হাতে যাবে?” সেই বিদেশি উপদেষ্টার কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি অভিযোগ করেন, মানবিক করিডরের নামে তিনি বাংলাদেশকে একটি যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চান। অথচ এই বিষয়ে দেশের জনগণ কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনাই করা হয়নি।

সালাহউদ্দিন বলেন, সেই বিদেশি উপদেষ্টা অত্যন্ত উদ্ধতভাবে বলেছেন—তাতে কিছু যায় আসে না। এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট দাবি জানানো হয়েছে—তাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করানো হোক, নাহলে সরকারই তাকে বিদায় করুক। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব বিদেশি নাগরিকের হাতে থাকতে পারে না। এটি একটি ষড়যন্ত্র, যার মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চলছে।”

সরকারের বন্দর, করিডোর, সমুদ্রবন্দর ইত্যাদি নিয়ে গোপন চুক্তির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “আপনি বিদেশে কী চুক্তি করে এসেছেন, তা আমরা জানি না। আপনি কি কন্ট্রাক্ট করে এসেছেন দেশের সম্পদ হস্তান্তরের জন্য?” তিনি প্রশ্ন করেন, বর্তমান সরকার কী ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, এবং স্মরণ করিয়ে দেন—তাদের একমাত্র দায়িত্ব হলো একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা।

বিএনপি নেতা বলেন, “আমরা বলেছিলাম, নির্বাচনমুখী জরুরি সংস্কার করতে হবে। সেই পরামর্শ আপনারা গ্রহণ করেননি। আপনি মনে করছেন, আপনাকে জনগণ অসীম ক্ষমতায় অভিষিক্ত করেছে। কিন্তু জনগণ যদি দেখতে পায় আপনি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করছেন না, তবে আপনার নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হবে।”

সালাহউদ্দিন অভিযোগ করেন, সরকারে কিছু উপদেষ্টা সরকারের নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি নষ্ট করে এমন উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন, যার লক্ষ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থায়ী করা। তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি কোনদিন আমাদের এই সরকারকে ঘেরাও করতে হয়, সেটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্য হবে। এ পরিস্থিতি চাই না আমরা।”

প্রফেসর ড. ইউনুসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনি বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তি, আমরা আপনাকে সম্মান করি। সম্মানের সাথে এই ডিসেম্বরের মধ্যেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করুন। সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া চলবে, কিন্তু সেটিকে অজুহাত করে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করা যাবে না।”

ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=WcJLVHoodws

এম.কে.

×