ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মামলা বাণিজ্য নিয়ে কুবি ও জেলা নেতাদের মুখোমুখি অবস্থান

মোহাম্মদ জোবাইর হোসাইন,কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:০৪, ১৭ মে ২০২৫

মামলা বাণিজ্য নিয়ে কুবি ও জেলা নেতাদের মুখোমুখি অবস্থান

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) এবং জেলা পর্যায়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে মামলা বাণিজ্য নিয়ে তীব্র দ্বন্দ্ব ও মুখোমুখি অবস্থান দেখা দিয়েছে। আন্দোলনের নেতাদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় দায়ের করা একটি মামলা বাণিজ্যের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে জেলা আহ্বায়ক মো. সাকিব হোসেন এ অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় হামলার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. এমরান হোসেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়, যাদের মধ্যে তিনজন ইতোমধ্যে মৃত। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ১৫০–২০০ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলাকে কেন্দ্র করেই ছাত্র আন্দোলনের অভ্যন্তরে শুরু হয় বিতর্ক ও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পালা।

গতকাল ১৬ মে রাতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সমন্বয়ক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, এমরান হোসেনকে জেলা আহ্বায়ক সাকিব হোসেনের চাপেই মামলা করানো হয়েছিল এবং পরবর্তীতে সেটি বাণিজ্যের অংশে পরিণত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক এমরান হোসেন বলেন, “কেউ যদি তার ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল বা টাকার বিনিময়ে আমাকে দিয়ে মামলা করিয়ে থাকে, আমি তা ঘৃণা করি। এই মামলা করার জন্য আমাকে ফোর্স করা হয়েছে। পরে এই মামলা নিয়ে যেসব অপকর্ম হচ্ছে, তার দায় আমি নেব না।”

এমরান আরও দাবি করেন, মামলা হওয়ার দীর্ঘদিন পর বিষয়টি প্রকাশ করা তার জন্য সহজ ছিল না। তবে এখন তিনি দেখতে পাচ্ছেন তার নাম ব্যবহার করে যেসব অনৈতিক কাজ হচ্ছে, সেটা গোপন রাখা ঠিক হবে না।

এদিকে, এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক মো. সাকিব হোসেন বলেন, “মামলা বাণিজ্য করে থাকতে পারে বাদী, বিবাদী কিংবা প্রশাসন। আমি কোনো মামলার সঙ্গে জড়িত নই। এসব অভিযোগ সত্য নয়।”

এ বিষয়ে কুবির আরেক সমন্বয়ক পাভেল রানা জানান, মামলায় এমরান ছাড়াও কিছু অপরিচিত ব্যক্তির নাম যুক্ত হয়েছে। মামলার পর থেকেই এই মামলাকে ঘিরে বাণিজ্যের গুঞ্জন শুরু হয়। পরবর্তীতে সমাধানের জন্য তারা আইনজীবীর মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেন।

সংশ্লিষ্ট ছাত্রনেতারা মনে করছেন, এই ঘটনা কুমিল্লায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব সংকট ও অভ্যন্তরীণ বিভাজনকে আরও প্রকট করে তুলেছে।

নোভা

×