
ছবিঃ সংগৃহীত
গত ৫ আগষ্ট রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি সেলিম ওসমান ও তাদের সহযোগিসহ ৪৬ জনের না উল্লেখ করে মামলা করেছেন নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সুপারভাইজার রঞ্জন কুমার রায় সুমন। মামলায় তিনি বলেছেন, দুর্নীতি লুটপাটের প্রমাণ নষ্ট করতে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে আগুন লাগিয়ে দেয় ওসমান গংরা।
শুক্রবার (১৬ মে) রাতে মামলা দায়েরের বিষয়টি সাংবাদিকরা অবহিত হন। শুক্রবার রাত পৌনে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নাসির আহমেদ মামলা দায়েরের বিষয়টি জনকণ্ঠের এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার দায়ের করা এ মামলায় নাম উল্লেখ করে ৪৬ জনকে ও নাম উল্লেখ ছাড়া আরো অজ্ঞাত একশ থেকে দেড়শ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সুপারভাইজার রঞ্জন কুমার রায় সুমন বলেন, ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট পর্যন্ত এমপি ও ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ওসমান, তার ভাই এমপি শামীম ওসমান, শামীম ওসমানের শ্যালক ক্লাবের সে সময়ের সভাপতি ও ক্লাবের চার বারের সভাপতি তানভীর আহমেদ টিটু নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্লাবে রামরাজত্ব কায়েম করে। তারা ক্লাবের বহুতল ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত তথ্যাবলি গোপন রাখে। বহুতল ভবনসহ ক্লাবে তাদের সকল ধরণের দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, তহবিল তসরুপ ধামাচাপা দিতে ২ আগষ্ট সন্ধ্যা ছয়টায় ক্লাবের গেস্ট হাউসের প্রেসিডেন্ট স্যুটে বসে গোপন বৈঠক করে এবং ছাত্র জনতার আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে ৫ আগষ্ট রাত আনুমানিক সাড়ে আটটায় শামীম ওসমানের নেতৃত্বে বাকি আসামীরা নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের ভেতর ফাঁকা গুলিবর্ষণ, ৮-১০টি ককটেল বিস্ফোরণ করে ক্লাবে ব্যাপক আতংক তৈরি করে। ক্লাবের অফিস কক্ষের সিন্দুক থেকে ছয় লাখ টাকা নিয়ে যায়। তারা ক্লাবের অফিস কক্ষ, গেস্ট হাউস, লাইব্রেরীসহ বিভিন্ন কক্ষে বিস্ফোরক দ্রব্য দিয়ে আগুন লাগিয়ে ব্যাংকের হিসাব জমা বই, এফ ডি আর রশিদ, রেকর্ডপত্র, টিভি, ফ্রিজ, এসি, কম্পিউটারসহ যাবতীয় মালামাল আগুনে পুড়িয়ে ফেলে। আগুন থেকে ক্লাবের নামাজ ঘরও রক্ষা পায়নি। এতে ক্লাবের দশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নাসির আহমেদ বলেন, মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মামলার আসামীদের মধ্যে আরো রয়েছেন, লায়ন্স গভর্নর ও ক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি শংকর কুমার রায়, শামীম ওসমানের বিয়াই ক্লাবের সাবেক জুনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়েজ উদ্দিন লাভলু, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট বিপ্লব সাহা রামু, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম রানা, ক্লাবের সাবেক সভাপতি খবির আহমেদ, সাবেক কার্যকরী সদস্য মঈনুল হাসান বাপ্পী, শামীম ওসমানের বন্ধু ও ইয়ান মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি লিটন সাহা, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান ও শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানসহ সহযোগীরা প্রমুখ ।
নোভা