ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আনন্দ মিছিল

রীনা আক্তার,নিজস্ব সংবাদদাতা,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ২১:২৫, ১৫ মে ২০২৫; আপডেট: ২২:১০, ১৫ মে ২০২৫

তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আনন্দ মিছিল

ছবি: সংগৃহীত


দীর্ঘ এক দশক পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জননন্দিত নেতা ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলকে সভাপতি এবং সিরাজুল ইসলাম সিরাজকে সাধারণ সম্পাদক করে গত ৯ মে শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।

এর পরই দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন সভা সমাবেশের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা জানান জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। এরই অংশ হিসেবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেন জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। 

পূর্ব ঘোষিত আনন্দ মিছিল কে কেন্দ্র করে বিকেল ৩টার পর থেকে  ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ মাঠে এসে জড়ো হয় দলটির নয়টি উপজেলা থেকে আসা বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। পরে সরকারি কলেজ মাঠ থেকে দলের সভানেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রঙ্গ বেরঙ্গের বিভিন্ন ছবি, ব্যানার ফেস্টুন, বাদ্য-বাজনা নিয়ে বিশাল আনন্দ মিছিল বেরহয়।

মিছিলের নেতৃত্ব দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি'র নবগঠিত কমিটির সভাপতি বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অর্থনৈতিক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ সহ দলটির  সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। আনন্দ মিছিলে বিএনপি তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। পরে আনন্দ মিছিলটি শহরের লোকনাথ ট্যাংকের পাড় ময়দানে এসে শেষহয়।

পরে ট্যাংকের পাড় ময়দানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ও নবগঠিত কমিটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহাবুব শ্যামল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান

তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,আজকের যে মিছিল, এই মিছিলের মাধ্যমে কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। সামনে যে কঠিন পরীক্ষা আসছে। সেটি জনগনকে সাথে নিয়ে অতিক্রম করতে হবে।

তিনি বলেন,আপনারা লক্ষ্য করছেন বর্তমান অন্তবর্তী সরকার তারা একেক সময় একেক ধরনের কথা বলছেন। বিভিন্ন সংস্কারের কথা বলছেন।আজকে যানজটকে উপেক্ষা করে তারা শাহবাগের চত্বর থেকে আইন প্রণয়নের চেষ্টা করছেন। আমি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো, যত সংস্কার আছে, সকল সংস্কার উল্লেখিত আছে জনাব তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচিতে। তারপরেও যদি কোন সংস্কার আপনার মনে করেন করবেন সেটি করেন তবে সেটি হল সঠিক নির্বাচনের সংস্কার মাধ্যমে। সেই সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। জনগণ যাকে ইচ্ছে তাকে ভোট দেবে। আগামী দিনে এই নির্বাচিত সরকার এসে সকল সংস্কার করবে। এই শাহবাগের সংস্কার বাদ দিয়ে আগারগাঁও যে আমাদের সংসদ আছে, সেই সংসদের মাধ্যমে সকল সংস্থার আপনারা করুন।

এ সময় তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্যোশ্য করে বলেন, আগামী দিনে নির্বাচনে আগ মুহূর্তে যে সময়টুকু আছে, সেই সময়টুকু আমাদেরকে ধৈর্য সহকারে কাটাতে হবে। আমরা বিএনপি কর্মীরা এমন কোনো কাজ করবো না, যাতে করে আমরা সাধারণ জনগণ থেকে দূরে সরে যাই।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আপনারা দেখেছেন, এই আওয়ামী লীগ তিনটি নির্বাচন বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচন, ২০১৮ সালে নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন জনগণ ছাড়া, ভোটার বিহীন নির্বাচন করেছেন। এর মাধ্যমে তারা সম্পূর্ণভাবে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে জুলাই আগস্ট এর যে আন্দোলন, এই আন্দোলনে তাদের দলের নেতাকর্মীরা পর্যন্ত তাদের সাথে থাকে নাই। এই আন্দোলন মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিদায় হয়েছে। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে আমাদের মত রাজনীতিবিদদের জন্য একটি শিক্ষা হয়েছে। ভবিষ্যতে যারা এই জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। জনগণ বিরোধী কাজ করবে, তাদের পরিণতি ও এরকমই হবে। এ সময় তিনি আনন্দ মিছিলে অংশ গ্রহনের জন্য দলীয় নেতা কর্মীদেরকে ধন্যবাদ জানান। 

সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি জহিরুল হক খোকন, সহ-সভাপতি এডভোকেট শফিকুল ইসলাম, এবিএম মমিনুল হক, সাধারন সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, কার্যকরী কমিটির ১নম্বর সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সদস্য ইঞ্জিনিয়ার কবীর আহমদ ভূইয়া সহ দলের নেতাকর্মীরা। 

উল্লেখ্য:-গত ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর জিল্লুর রহমানকে আহ্বায়ক করে জেলা বিএনপির ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ২৯ মে জিল্লুর রহমানের মৃত্যু হয়। এরপর ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট জেলা বিএনপির পাঁচ সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। ওই পাঁচ সদস্যের কমিটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এর পর বিরোধ না মিটিয়েই ২০২৪ সালের ২ নভেম্বর আবারো ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। পরে ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে দুই পক্ষ পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছিল।

আলীম

×