ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সিরাজগঞ্জে ৩০ বছরের পুরনো সেতু, রেলিং ভেঙে ঝুঁকিতে পথচারী

এইচ এম মোনায়েম, রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ)

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ১৫ মে ২০২৫

সিরাজগঞ্জে ৩০ বছরের পুরনো সেতু, রেলিং ভেঙে ঝুঁকিতে পথচারী

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া ইউনিয়নের রৌহা দক্ষিণপাড়া খালের উপর নির্মিত সেতুর দুই পাশের রেলিং ভেঙ্গে গেছে। জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে পথচারীরা। এতে করে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুটি সংস্কার অথবা নতুন করে নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।

প্রায় ৩০ বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে নির্মিত সেতুটি বর্তমানে সংস্কারের অভাবে বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেতুর ভাঙ্গা রেলিং, খসে পড়া সিমেন্ট, এবং অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাওয়ায় এটি এলাকাবাসীর জন্য বড় ধরনের বিপদ হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, সেতু দিয়ে দিনে কিছুটা চলাচল করা গেলেও, রাতে অন্ধকারে চলাফেরা খুবই কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

সরেসমিন এলাকায় গিয়ে স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ধানগড়া ইউনিয়নের রৌহা দক্ষিণপাড়া খালের প্রায় ৩০ বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে নির্মাণ করা হয় এই সেতুটি। নির্মাণ করার সময় সেতুর দুপাশে রেলিং ছিল। সেতু নির্মাণের বেশ কয়েক বছর পার হলে দুপাশের রেলিং ভেঙ্গে যায় এবং জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে।

রেলিং ও ভাঙ্গা সেতু দিয়ে চলাচল এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই সেতুর উপর দিয়ে আট গ্রামের সাধারণ পথচারী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী সহ প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার মানুষ নিয়ে চলাচল করে থাকে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মমিন জানান, রেলিং ভাঙ্গা ও জরাজীর্ণ এই সেতুর উপর দিয়ে দিনের বেলা কোন রকম চলাফেরা করা গেলেও রাতের বেলায় অন্ধকারে চলাচল খুব কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়। এরপরেও আট গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

রৌহা দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ক্বারী মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিন জানান, স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য সহ অনেকের কাছেই ব্রিজটি সংস্কারের জন্য গিয়েছি কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বর্তমান অন্তবর্তী কালিন সরকারের কাছে দাবি আমাদের সেতুটি সংস্কার অথবা নতুন করে নির্মাণ করে দেয়া হোক।

ব্রিজ সংলগ্ন বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, ৩০ বছর আগে নির্মিত সেতুটির পিলারের সিমেন্ট খসে পরেছে । যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। বর্তমানে সেতুটি দীর্ঘদিন যাবত চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরায় আমরা কৃষি পণ্য নিয়ে হাট বাজারে যেতে পারি না।

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম জানান, কয়েকদিন পূর্বেও একটি গরু ঐ সেতু থেকে পরে মারা গেছে। স্কুলগামী কয়েকজন ছাত্র স্কুলে যাওয়ার পথে সেতুটির রেলিং না থাকায় অজানা বসত ব্রিজ থেকে সাইকেল নিয়ে পানিতে পরে যায়। বৃদ্ধ ও শিশুরা উক্ত সেতু দিয়ে চলাফেরা করতে পারছে না। মাঝ খানে ঢালাই ভেঙ্গে যাওয়ায় ঝুকি নিয়ে পারাপার করছে ভ্যান, অটোভ্যন, মোটর সাইকেল এবং কৃষি পণ্য আনা নেওয়ায় চাষীরা পরছে বিপাকে।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সেখ জানান ব্রিজটি পূর্ন নির্মানের জন্য এলজিইডি অধিদপ্তর বরাবর প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ শামসুল ইসলাম জানান, সেতুটি এতই ভগ্নদসা যে এখনি নির্মাণ করা প্রয়োজন। সেই সাথে তিনি আরো বলেন, উপজেলার যে সব স্থানে কালভার্ট, সেতু ভাঙ্গা আছে, এগুলো পর্যায়ক্রমে নতুন করে নির্মাণ সহ সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।

উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানান, এই উপজেলার শতাধিক সেতুর প্রস্তাবনা দেওয়া আছে।  তার মধ্যে এই সেতুটি আছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক ক্ষতিগ্রস্থ সেতুটি নির্মানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নুসরাত

×