
ছবি: জনকণ্ঠ
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের সরকারি কাজে বাধা প্রদান, পুলিশের ওপর চড়াও হওয়া এবং তার বাড়িতে সাড়ে ছয় ঘণ্টা পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার রাতে সদর থানার এসআই রিপন মৃধা বাদী হয়ে ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ বিষয়ে দৈনিক জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ওসি জানান, সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় চারটি ও ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে। এদের মধ্যে একটি মামলা গার্মেন্ট শ্রমিক মিনারুল ইসলাম হত্যাকাণ্ড-সংক্রান্ত। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জেলা পুলিশের একটি দল অভিযানে গেলে, আইভীর অনুগত লোকজন আশপাশের মসজিদের মাইক ব্যবহার করে লোক জড়ো করে।
আইভীর বাড়ির আশেপাশে থাকা সড়কের মুখে উশৃঙ্খল কর্মী-সমর্থকরা সিমেন্টের খুঁটি, বালি, ইট, কাঠ, বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে যানচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
পুলিশ জানায়, আইভীর বাড়িতে প্রবেশ করে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) হাসিনুজ্জামান, ওসি নাসির উদ্দিন আহমেদ ও ওসি শাহিনুর আলমসহ পুলিশের কয়েকজন সদস্য রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক স্লোগান দেন ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, “দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ থাকলেও পুলিশ ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। আমরা বলপ্রয়োগ না করে আইভীকে গ্রেপ্তার করি।” তিনি আরও বলেন, “পুলিশ রাষ্ট্রের হয়ে কাজ করে। সরকারি কাজে বাধা প্রদান করলে আইনগত ব্যবস্থা নিতেই হয়, না হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।”
পুলিশ সুপার জানান, “সেই রাতের ভিডিও ফুটেজ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দৃশ্য বিশ্লেষণ করে দোষীদের চিহ্নিত করা হবে। পাশাপাশি, নিরীহ কাউকে যেন হয়রানি না করা হয় সে বিষয়েও সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে আইভীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয় এবং শুক্রবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোট পাঁচটি মামলার মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গার্মেন্ট শ্রমিক মিনারুল হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সকালে আদালতে হাজির করলে বিচারক মাইনুদ্দিন কাদির তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে পুলিশ কোনো রিমান্ডের আবেদন করেনি।
শহীদ