
ছবি: জনকণ্ঠ
বাগেরহাটে চলমান তীব্র তাপদাহে মানুষের জীবনযাপন চরম দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষ। রবিবার (১১ মে) দুপুরে এ জেলা তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। যা শ্রমজীবী মানুষের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
স্থানীয় কৃষক, ধান খেতে কাজ করা মজুর ও নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, প্রচন্ড গরমে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে, তবুও জীবিকার তাগিদে কাজ তরতে বাধ্য হচ্ছেন। নির্মাণ শ্রমিক শাহ আলম বলেন, “গরমে মাথা ঘোরে, শরীর দুর্বল লাগে, কিন্তু কাজ না করলে খাব কী?”
তাপদাহের কারণে জেলার কৃষিকাজেও প্রভাব পড়েছে। বোরো মৌসুমে এখানে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন কৃষক ধান ঘরে তোলায় ব্যস্ত। বেশিরভাগ ধান কাটা হয়ে গেলেও চলছে মাড়াইয়ের কাজ। এ অবস্থায় তীব্র দাবদাহে মাঠে কাজ করতে গিয়ে অনেক কৃষক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তারা হিটস্ট্রোকের আশঙ্কায় ভুগছেন।
ফকিরহাট উপজেলার বাহিরদিয়া এলাকায় দিন চুক্তিতে ধান মাড়াইয়ের কাজ করছেন রাজশাহী থেকে আগত বেশ কয়েকজন শ্রমিক। এদের একজন সরদার আলী বলেন, “পাঁচ-দশ মিনিট রোদে থাকলেই চোখে অন্ধকার দেখি। মাথার উপর তীব্র রোদ, কোথাও কোন বাতাস নেই। তবু চুক্তি অনুযায়ী কাজ করতে হচ্ছে।’
পাগলা শ্যামনগর এলাকার মোস্তফা হাসানসহ একাধিক কৃষক জানান, তীব্র তাপদাহে কাজের জন্য শ্রমিকদের বেশি মজুরী দিতে হচ্ছে। এতে তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। একাধিক ভ্যান চালকও একই পরিস্থিতির কথা বলেন। তবে অনেকেই জানান, কাজ না করলে উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে, তাই তারা বাধ্য হচ্ছেন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। ডেমা এলাকার সবজি চাষি শেখ হালিম বলেন, প্রখর রোদে দুপুর হতে না হতেই সবজির ক্ষেত ঢলে পড়ছে। গাছ টিকিয়ে রাখাই কষ্ট হয়ে পড়ছে।’
এদিকে, জেলার অধিকাংশ হাসপাতালে তীব্র গরমে ডায়েরিয়ার রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক অসীম কুমার সমদ্দার জনকণ্ঠকে বলেন, “হাসতাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ অত্যাধিক। চিকিৎসক ও সেবিকাদের রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের আরএমও ডা. মোস্তাফিজুর রহমান অনুরূপ রোগীর চাপ রয়েছে বলে জানান। তিনি চলমান তাপদাহে সকলকে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান ও বিশ্রামের পরামর্শ দেন।”
শহীদ