ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

গরমে ধান কাটা নিয়ে বিপাকে কৃষক

মনোয়ার হোসেন লিটন, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ১১ মে ২০২৫; আপডেট: ২১:০১, ১১ মে ২০২৫

গরমে ধান কাটা নিয়ে বিপাকে কৃষক

ছ‌বি: জনকণ্ঠ

গেল কয়েকদিনে কুড়িগ্রামের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রির ঘরে। গরমে নাকাল মানুষ, প্রকৃতি ও পশু-পাখি। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে বোরো ধান কাটার শ্রমিকেরা। প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে তাদের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করতে হচ্ছে। অনেক এলাকায় শ্রমিকের অভাবে ধান কর্তন ব্যাহত হচ্ছে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামে পুরোদমে বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ধানের ফলন মোটামুটি ভালো হওয়ায় কৃষকরা কিছুটা খুশি হলেও কর্তন শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে।

কর্তন ও মাড়াইয়ের জন্য কুড়িগ্রাম জেলায় চুক্তিভিত্তিক খরচ হতো প্রতি শতকে ১২৫ টাকা। তবে কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড গরমের কারণে শ্রমিকেরা ভালোভাবে কাজ করতে পারছেন না। এতে তারা শতকে টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে এক শতক জমি কর্তন করতে খরচ হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। এতে কৃষকদের অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। অনেক এলাকায় এখনো শ্রমিকের অভাবে ধান কর্তন করা যাচ্ছে না।

কথা হয় রাজাহাট উপজেলার কৃষক আনিসুর রহমানের সঙ্গে। তিনি দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, "বর্তমানে এই রোদে মাঠে গিয়ে কাজ করাটা অনেকটাই কঠিন। ঘামে গা ভিজে যায়, মাথা গরম হয়ে যায়, সূর্যের তাপ সহ্য করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে গরমের কারণে ধান কর্তন শ্রমিকেরা টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে।"

চিলমারীর কৃষক আলমগীর বলেন, "এমনিতেই এবার ধানের দাম কম, তার ওপর শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকের অভাবে ধান মাঠে পড়ে আছে।"

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হরিশ্বর গ্রামে দেখা যায়, শ্রমিকের অভাবে কৃষক তার পরিবারকে নিয়ে ধান কর্তন করছেন। কথা হয় নুর ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, "শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছি না। সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ধান কাটতে এসেছি। তবে রোদ প্রচণ্ড থাকার কারণে মাঠে থাকা যাচ্ছে না।"

কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, "গতকাল জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ কিছুটা কমে হয়েছে ৩৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে আগামী মঙ্গলবার বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।"

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, "গরম অতিরিক্ত হলেও ধান কাটা খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। কারণ, ধান কর্তনের জন্য আমাদের ১২০টি হারভেস্টার মেশিন আছে। কিছু নিচু এলাকা আছে যেখানে হয়তো শ্রমিকের প্রয়োজন হতে পারে। ইতিমধ্যে আমাদের জেলায় মোট উৎপাদনের ৪১% ধান কর্তন হয়েছে।"

এম.কে.

×