ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

বাবার জানাজা ও দাফন শেষ করে পরীক্ষার  হলে গেলেন মেহনাব

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২০:৫০, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

বাবার জানাজা ও দাফন শেষ করে পরীক্ষার  হলে গেলেন মেহনাব

ছবি: জনকণ্ঠ

বুধবার সকালে বাবার জানাজা ও লাশের দাফন শেষ করে পরীক্ষার  হলে গেলেন মেহনাব হোসেন। এ বছর তিনি দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছেন। 

মেহনাবের বাবার নাম  মো. জসিম উদ্দিন (৪৫)। তিনি সাত বছর আগে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে মালদ্বীপ গিয়েছিলেন। স্বপ্ন ছিল কাজ করে ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন, সংসারে ফিরিয়ে আনবেন সচ্ছলতা। হাসি ফোটাবেন স্ত্রী–সন্তানদের মুখে। 

স্বপ্নপূরণের ধারপ্রান্তেও এসেছিলেন।  কিন্তু  সেই স্বপ্নপূরণের  আগেই তিনি মারা যান। বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাকে লাশ হয়ে।

 তাঁর স্ত্রী মোসা. মাসুমা আক্তার (৩৭)। জানান বাংলাদেশ সময় গত শনিবার দিবাগত রাত চারটার দিকে মালদ্বীপের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জসিম। হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।

জসিমের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে। তার বাবার নাম মো.আলাউদ্দিন আহম্মেদ। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সেজ। জসিমের এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে মেহনাব হোসেন এ বছর দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছে। আর মেয়ে মোছা. জেরিন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।

জসিমের ছোট ভাই মো. মাহফুজ বলেন, জীবিকার তাগিদে ২০০৫ সালে সৌদি আরব গিয়েছিলেন জসিম। ২০১৭ সালে বাড়ি ফিরে এসে মুরগির খামার করেছিলেন। মুরগির খামারে লোকসানে প্রবাসের আয় করা সব টাকা শেষ হয়ে যায়। উল্টো ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েন। 

২০১৮ সালে চলে যান মালদ্বীপে। মালদ্বীপের কুলহুধুফুশি আইসল্যান্ডে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। আসছে ঈদুল আজহায় বাড়ি ফেরার কথা ছিল। 

২৫ এপ্রিল, শুক্রবার বুকে ব্যথা নিয়ে মালদ্বীপের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই বাসায় ফিরে যান। পরের দিন শনিবার রাতে বুকে ব্যথা অনুভব হলে সহকর্মীরা তাঁকে আবার হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত চারটার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মঙ্গলবার রাতে জসিমের লাশ  নিয়ে আসা হয় বাড়িতে মালদ্বীপের প্রবাসী ডা. এইচএম সোহেলের সহযোগিতায় দ্রুত  সময়ের মধ্যে তার লাশ দেশে পাঠানো হয়।

মেহনাবের বাবার জানাজায় স্থানীয় কয়েকশ মুসুল্লিরা জানার নামাজে  অংশ নেয়। ঢাকা থেকে জানজায় ভার্চুয়াল বক্তব্য  রাখেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি  ও বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান  ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। 

তিনি বক্তব্যে প্রবাসী জসিমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। 

বিশেষ  করে তিনি কৃতজ্ঞতা  প্রকাশ করেন প্রবাসী চিকিৎসক  ডা. এইচএম সোহেলের প্রতি। তার পদক্ষেপের কারণেই জসিমের লাশ দ্রুত দেশে পাঠানো  সম্ভব হয়েছে। 

এদিকে  বাবার জানাজা ও দাফন শেষ করে জসিম উদ্দিনের বড় ছেলে মেহনাব হোসেন পরীক্ষার  হলে যান। মেহনাব এ বছর কালাইয়া রাব্বানীয়া ফাযিল মাদ্রাসা কেন্দ্র  থেকে দাখিল  পরীক্ষা  দিচ্ছেন।

শিহাব

×

শীর্ষ সংবাদ:

যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু
জামায়াত নেতারা রাজাকার হলে পাকিস্তানে গাড়ি বাড়ি থাকতো : শামীম সাঈদী
এনসিপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই- উমামা ফাতেমা
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটকদের অধিকাংশই ভারতীয় মুসলমান
ইয়েমেনে হামলা চালিয়েই সাগরে ডুবে গেল মার্কিন সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান
জামিন পেলেননা তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন
লন্ডনে আজ আর্সেনাল পিএসজি মহারণ
১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা, তালিকায় আছেন নুসরাত ফারিয়া-অপু বিশ্বাস-ভাবনাসহ অনেকেই
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতা থেকে পতনের পথে
কুমিল্লায় পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরির নামে প্রতারণা: দালালসহ ১৩ জন গ্রেফতার
১২ বছর বয়সী ছেলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার