
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ
কালবৈশাখি ঝড়ে বসত ঘরের টিনের চালে গাছ পড়ে চাপা পড়েছিলেন মা ও মেয়ে। তাদের আর্তনাদ ছিল বাঁচাও বাঁচাও।এরপর সেই চিৎকারের শব্দও থেমে যায়। ঝড় বৃষ্টি থামার পর গ্রামবাসী এক ঘণ্টা পর তাদের জীবন্ত উদ্ধার করে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভোরে নীলফামারীর সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় কালবৈশাখি ঝড়ের তাণ্ডবে জেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা ত্রাণ শাথা সূত্রে জানা যায়।
টুপামারী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মছিরত আলী শাহ্ ফকির সহ গ্রামবাসী জানায়, ঝড়ে ওই এলাকাসহ আশেপাশের গ্রামের বসতবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ সময় হাজিপাড়ার বাসিন্দা সুজা মিয়ার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শরমলি বেগম তার ৬ বছর বয়সী মেয়ে সাজিদাকে নিয়ে একটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। কাল বৈশাখীর প্রচণ্ড ঝড়ে বাড়ির পাশে থাকা একটি বিশাল জাম গাছ ওই ঘরের চালে ভেঙ্গে পড়লে ঘরটি দুমড়ে মুচড়ে যায় ও ঘরে থাকা মা মেয়ে চাপা পড়ে। তখন বাহিরে তুমুল ঝড় বৃষ্টি চলছিল। এই ঘটনায় মা ও মেয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে। আশেপাশের প্রতিবেশীরা ঝড়ের কবলে ঘর থেকে বের হতেও পারছিল না। ঘণ্টাখানেক পর ঝড়বৃষ্টি থেমে খেলে শতশত গ্রামবাসী ছুটে আসে। তারা দ্রুত উদ্ধার কাজ শুরু করেন এবং মা ও মেয়েকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
তাঁদের নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। তবে ঝড়ে শরমলি বেগমের ঘরের ভেতরে থাকা টিভি খাটসহ প্রায় সকল আসবাবপত্র ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। শরমলি বেগমের স্বামী বর্তমানে শ্রমিকের কাজে দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থান করছেন। ওই গৃহবধূ জানায় আমার গর্ভে থাকা সন্তান ও আমি সহ আমার মেয়ে যেন আল্লাহর মহিমায় নতুন করে জীবন ফিরে পেলাম।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মনোয়ারুল ইসলাম জানান, কালবৈশাখি ঝড়ে জেলা সদর, ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার কৃষিজমির ফসল এবং গাছাপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আনুমানিক ৪৭৫টি কাঁচা বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তাহমিন হক ববী / ফারুক