ছবি: জনকণ্ঠ
ভুয়া শিক্ষক সেজে এসএসসি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে এক কলেজছাত্র গ্রেপ্তার হয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ধনবাড়ী পৌরসভার সাকিনা মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুলে। এসএসসি পরীক্ষার এক নম্বর হলে ধনবাড়ীর ভাইঘাট টেকনিক্যাল স্কুলের রাবেয়া জাহান নামের এক শিক্ষিকার পরিবর্তে হিমেল হোসেন নামের এক কলেজ ছাত্র পরীক্ষার হলে গার্ডের দায়িত্ব পালন করার সময় তিনি ধরা পড়েন।
সাকিনা মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ও কেন্দ্র সচিব গোলাম রব্বানী জানান, রাবেয়া জাহান নামের এক শিক্ষিকার পরিবর্তে হিমেল হোসেন নামে একজন কলেজ ছাত্র এসএসসি পরীক্ষার কারিগরি শাখার এক নম্বর হলে পরীক্ষার গার্ডের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় হল পরিদর্শনে গেলে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান স্যারের সন্দেহ হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ভুয়া শিক্ষক বলে শনাক্ত হন। এ বিষয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা রাবেয়া জাহান সাংবাদিকদের জানান, "আমি রবিবার ২৭ এপ্রিল পরীক্ষার হলে যেতে পারবো না—এ কথা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার নজরুল স্যার, পরীক্ষা কেন্দ্রের শামীম স্যার ও অফিস সহকারী নাজিম ভাইকে আগের দিন রাতেই জানিয়েছিলাম। তাদের বলেই আমি আজ রবিবার ওই কলেজ ছাত্র হিমেলকে পরীক্ষার হলে আমার পরিবর্তে ডিউটি করতে পাঠিয়েছিলাম। এখন তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে থানা হাজতে রেখেছে। তবে একাডেমিক সুপারভাইজার স্যারের সাথে ফোনে কথা হয়েছে, তিনি চিন্তা করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেন বিষয়টি তিনি দেখবেন।"
এ বিষয়ে ধনবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি হেসে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাবুল হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, "রাবেয়া জাহান নামের এক শিক্ষিকার পরিবর্তে হিমেল হোসেন নামের এক কলেজ ছাত্র পরীক্ষার হলে প্রক্সি গার্ড ডিউটি শুরু করেন। পরীক্ষা শুরুর দুই ঘণ্টা পরে তিনি ধরা পড়েন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ভুয়া শিক্ষক ও ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।"
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহীন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, "ভুয়া শিক্ষক কলেজ ছাত্র হিমেল এবং রাবেয়া জাহান নামের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কেন্দ্র সচিব বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ হিমেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি জানার পরপরই আমি ও এসিল্যান্ড ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে এ ঘটনায় যদি হল সুপার, কেন্দ্র সচিব বা শিক্ষা অফিসের কেউ জড়িত থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাদেরকেও মামলায় আসামি করা হবে।"
গ্রেপ্তারকৃত ভুয়া শিক্ষক হিমেল হোসেন (২৩) মধুপুর উপজেলার মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের হাসিল পালবাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি মধুপুর সরকারি কলেজের বিএসএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
এম.কে.
