ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

মন্ত্রিত্ব হারানোর পর এবার এমপি পদও হারাবেন টিউলিপ!

প্রকাশিত: ০৭:৫৪, ২৪ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১১:১১, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

মন্ত্রিত্ব হারানোর পর এবার এমপি পদও হারাবেন টিউলিপ!

ছবি : সংগৃহীত

টিউলিপ সিদ্দিকের কেলেঙ্কারি ব্রিটিশ রাজনীতিতে একটি জটিল সংকট তৈরি করেছে। লেবার পার্টির এই সাবেক মন্ত্রী এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি নিজেকে কখনোই বাংলাদেশি হিসেবে স্বীকার করতে চাননি, যদিও নথিপত্রে তিনি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক নামে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে তালিকাভুক্ত। এই দ্বৈত অবস্থান তাকে আইনি ও নৈতিক জটিলতায় ফেলেছে। ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী, শুধু দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকাটা অপরাধ নয়, কিন্তু বিদেশি সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন বা জাতীয় স্বার্থবিরোধী কাজে জড়িত থাকাটা গুরুতর অপরাধ।

 

 

টিউলিপের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে বাংলাদেশে জমি কেলেঙ্কারি এবং প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া লন্ডনের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট উপহার হিসেবে পাওয়ার ঘটনা গোপন করায় তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বিশ্বাসভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত। স্যার লরি ম্যাগনাসের নেতৃত্বে হওয়া তদন্তে প্রমাণ মিলেছে যে তিনি প্রথমে মিথ্যা বলেছেন, পরে চাপে পড়ে বক্তব্য পরিবর্তন করেছেন।

 

এই কেলেঙ্কারির সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো টিউলিপের দ্বৈত ভূমিকা। একদিকে তিনি ব্রিটিশ জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি, অন্যদিকে বাংলাদেশের ক্ষমতাধর শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্য। ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই দ্বন্দ্বকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে। রিকল অফ এমপিজ অ্যাক্ট ২০১৫ অনুযায়ী, যদি তিনি এক বছরের বেশি সাজা পান তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংসদ সদস্য পদ হারাবেন। এছাড়া মাত্র ১০ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর পেলেই তার পদত্যাগের দাবি জোরালো হতে পারে।

 

বর্তমানে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন এবং ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টি তার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালাচ্ছে। হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটে তার বিরুদ্ধে "৫ বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির ছায়া" শিরোনামে প্রচার চলছে। ব্রিটিশ মিডিয়া তাকে "শেখ পরিবারের গুপ্তদূত" আখ্যা দিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করছে। এই কেলেঙ্কারি শুধু একজন রাজনীতিবিদের পতন নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দ্বৈত নাগরিকত্ব, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নৈতিকতার সংকটের একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। এখন দেখার বিষয় হলো ব্রিটিশ বিচারব্যবস্থা এবং জনমত এই জটিল পরিস্থিতি থেকে কীভাবে উত্তরণ ঘটায়।

আঁখি

×