ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

খুলনায় ঈদ বাজারে উপচেপড়া ভিড়

প্রবীর বিশ্বাস, খুলনা অফিস

প্রকাশিত: ২১:২৮, ২২ মার্চ ২০২৫

খুলনায় ঈদ বাজারে উপচেপড়া ভিড়

খুলনা : ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত নারী-পুরুষ

ঈদে সবশেষে বেশি আনন্দ পরিবারের শিশুদের। আনন্দকে আরও রাঙিয়ে তুলতে নতুন পোশাক চাই-ই চাই। অনেক সময় একটায় হয় না, একাধিক প্রয়োজন। সঙ্গে নতুন জুতা, বেল্ট, ঘড়ি, চশমা, প্রশাধনী আরও কত কি। একদিনে এই কেনাকাট শেষ হয়না। কয়েক দিন সময় লেগে যায়। তাই তো প্রথমেই শেষ করেছি। এরপর কিনছি বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের বেশি বয়সীদের জন্য। একটু আগেভাগে তাদের হাতেও নতুন পোশাক দিয়ে সালাম করলে ভীষণ খুশি হন। সবশেষে আমরাসহ অন্যদের জন্য। দোকান ঘুরে ঘুরে দেখছি, পছন্দ হলে সাধ্যের মধ্যে থাকলেই কিনে ফেলছি। এসব বলছিলেন খুলনার ডাকবাংলোর মোড়ের বিপণি বিতানে কেনাকাটা করতে আসা স্কুলশিক্ষক রবিউল ইসলাম।
খুলনার ছোট-বড় মিলে শতাধিক মার্কেট রয়েছে। যেখানকার পোশাকের দোকানে ভিড় দেখে বোঝাই যায় দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর সমাগত। এমন কোনো মার্কেট নেই যেখানে ক্রেতাদের ভিড় নেই। কেউবা একা আবার কেউ সন্তান ও পরিবারের অন্য সদস্যসহ এসেছেন ঈদের বাজার করতে। কারও কারও আবার গার্মেন্টসের তৈরি পোশাকে বিশ্বাসী নয়। তাদের পছন্দ সিট কাপড় কিনে পোশাক তৈরিতে। ফুটপাত থেকে শুরু করে বিপণি বিতান ও আউটলেটেও পা রাখার জায়গা নেই। দোকানিদেরও ফুরসত ফেলার সময় নেই। আগামী দিনের আরও বেশি ভিড় ও গরম এড়াতে অনেকে আগেভাগেই সেরে নিচ্ছেন কেনাকাটা। কেউ আবার ঘুরে ঘুরে দেখছেন ঈদ উপলক্ষে বাজারে নতুন নতুন কি ধরনের কালেকশন এসেছে। তবে দোকানিরা বাড়তি দাম চাইছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। আর দোকানিদের দাবি বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে তাদের। অপরদিকে কেনাকাটা নির্বিগ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।
আনিকা খাতুন নামের ১২ বছর বয়সী এক শিশু বলেন, আমি জামা কিনেছি, প্যান্ট কিনেছি, জুতা কিনেছি, সাজগোজের জিনিস কিনেছি। আব্বু প্রতিবারই আমার আর ভাইয়ের ড্রেস আগে কেনে। আমি ভীষণ খুশি, ভাইও অনেক খুশি। আম্মু এখন দাদা-দাদি আর নানুর জন্য কিনছে। শুধুমাত্র বিপণি বিতানগুলোতেই নয়। সমানে কেনাবেচা চলছে ফুটপাত, বাক্স কিংবা ভ্যানের ওপর দোকানেও। বরাবরের মতোই যেখানে ভিড় দেখা যায় স্বল্প আয়ের মানুষের। আর মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্তরা অনেকই যাচ্ছেন আউটলেটগুলোতে। ভিড় বেড়েছে পাঞ্জাবির দোকানেও। কেউ আবার শাড়ির দোকানে, কেউ জুতা স্যান্ডেল কিংবা কসমেটিকসের দোকানেও ছুটছেন। পছন্দ আর বাজেট মিললে অনেকেই কিনে নিচ্ছেন প্রয়োজনীয় পোশাক।

কেরানীগঞ্জে ঈদ বাজারে
বাড়ছে ভিড়

সংবাদদাতা কেরানীগঞ্জ, ঢাকা থেকে জানান, ঈদুল ফিতর সামনে রেখে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। দিন-রাতে সুবিধামতো সময়ে ক্রেতারা যাচ্ছে কেরানীগঞ্জের মার্কেট, শপিংমলগুলোতে।  বিগত বছরের তুলনায় পণ্যের দাম একটু বেশি হওয়ায় কিছুটা ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। শনিবার সকাল থেকে কেরানীগঞ্জের বেশ কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ভিড় শুধু পোশাকের দোকানগুলোতেই নয়। রয়েছে জুতা, অলঙ্কার ও কসমেটিকসের দোকানেও। ফুটপাতের মার্কেটগুলোতেও মধ্য ও নিম্নবিত্তের মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এসব ফুটপাত থেকে মানুষ সাধ্যের মধ্যে প্রিয়জনের জন্য কিনছেন পোশাক, জুতা, কসমেটিকস, অলঙ্কারসহ প্রয়োজনীয় নানা জিনিসপত্র। চলছে কেনা-কাটার ধুম।  
কদমতলী লায়ন সুপারশপের এক ক্রেতা জানান,  এবার সব ধরনের পণ্যের দাম একটু বেশি। বাসা থেকে বাজেট করে এসে কোনো কিছু কেনা সম্ভব হচ্ছে না, যা অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্যে সামর্থ্যরে বাইরে। কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঈদুল ফিতর সামনে রেখে কেরানীগঞ্জের মার্কেট, শপিংমলগুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা চলছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশের একাধিক টিম মাঠে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে।
মাগুরায় দোকানে দোকানে  ভিড়

নিজস্ব সংবাদদাতা মাগুরা থেকে জানান, মাগুরায় শেষ মুহূর্তে দোকানে দোকানে উপচেপড়া ভিড়। সুন্দর ও আলোকসজ্জা সকলের দৃষ্টি কাড়ছে। ক্রেতারা বর্তমানে জমজমাটভাবে বেচাকেনা চলছে। ঈদ বাজার জমজমাট ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় চারদিক মুখরিত হয়ে উঠছে। শহরের নূরজাহান প্লাজা, বেবী প্লাজা, সুপার মার্কেট, বকসি মার্কেট, সুপার মার্কেট, জুতা পট্টি, কাজী টাওয়ার, হাজিপুর মার্কেট প্রভৃতি মার্কেট ও দোকানগুলোতে বাজার করছে মানুষ। গার্মেন্টস ও শাড়ি কাপড়ের দোকানগুলোতে প্রচুর ভিড় হচ্ছে। ক্রেতারা এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেট ঘুরে পছন্দের পণ্য ক্রয় করছেন। বর্তমানে ছিট কাপড়ের দোকানের বিক্রি হচ্ছে বেশি। জুতার দোকানগুলোতে ভালো ভিড়। নানা ডিজাইনের জুতা খুঁজছেন তরুণীরা। দর্জিরা  সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নতুন পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। গভীর রাত পর্য়ন্ত চলছে বেচাকেনা। ঈদ উপলক্ষে শহর আলোকমালায় সেজেছে।

×