ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাইবার নিরাপত্তায় কাজ করছে আবদুল রহমান

প্রকাশিত: ১৫:৩৬, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪; আপডেট: ২২:৩৭, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সাইবার নিরাপত্তায় কাজ করছে আবদুল রহমান

আবদুল রহমান

ইন্টারনেটে নানা কারণে হ্যারেসমেন্টের শিকার হওয়া বর্তমান সময়ের স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এর কারণে কোনও কোনও সময় অস্বাভাবিক বিপদের সম্মুখীনও হতে হয়। দেখা যায়—‍কখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনও প্রলোভন কিংবা প্রতারণার ফাঁদে পড়ে হারাতে হয় বহুমূল্য মানের একাউন্ট ও আইডি। এককথায়—‍ইন্টারনেটে হ্যারেসমেন্টের শিকার হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। 

ফেসবুকে বা ইন্সটাগ্রামে ফেক আইডি দ্বারা কিংবা গেমিংয়ের ক্ষেত্রে আইডি স্ক্যামের ফাঁদে পড়ে অনেক মানুষ। আর ভার্চুয়াল দুনিয়ায় এসব সমস্যার শিকার হয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তেমন কোনও সাহায্য পাওয়া যায় না। যে কারণে সোশ্যাল মিডিয়া বা ভার্চুয়াল দুনিয়া নিয়ে অনেকের মধ্যে ভীতিও কাজ করে।

এই ভয়ের অন্যতম একটি কারণ এটিও যে—আইডি হ্যাক হলে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি বিব্রতকর পরিস্থিতেও পড়তে হয় অনেক সময়। কারণ, হ্যাকাররা সেটি আয়ত্বে নিয়েই সেখানে নানা আপত্তিকর কন্টেন্ট প্রকাশ করে। ফলে সমাজের কাছে নিজের অবস্থান নিচু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। একইসঙ্গে অনলাইনে অশ্লীলতাও তাদের ভীতির কারণ।

ইন্টারনেট জগতের এই অতি পরিচিত সমস্যাগুলোর সমাধান করার জন্যই পিরোজপুরের ছেলে আবদুল রহমান প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘রাইডার অফিসিয়াল’। তিনি পেশায় একজন সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনার। তার লক্ষ্য অনলাইন জগতকে অশ্লীলতামুক্ত রাখার পাশাপাশি সবাইকে নিয়ে সাইবার সচেতনতায় কাজ করা।

একইসঙ্গে তিনি Rider Vau Official নামে অনলাইন-ভিত্তিক ডিজিটাল মার্কেটিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠার জন্যও পরিচিত। আবদুল রহমান ক্যাম্পাসিয়ান ফ্যামিলিতে সাইবার ডিরেক্টর হিসেবে স্বেচ্ছাসেবী সেবা প্রদান করছেন, যা একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংযুক্ত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধানও খুঁজে বের করে।

আবদুল রহমান বলেন, দুই-তিন বছর আগে, সারাবিশ্বের মতো এদেশেও যখন কোভিড চোখ রাঙাচ্ছিল, তখন ইন্টারনেট হ্যারেসমেন্টের ব্যাপারগুলো অনেক বেড়ে যায়। এর হাত থেকে রেহাই পাইনি আমিও। তখন আমি গেম খেলতাম। গেমের ভার্চুয়াল ডায়মন্ড টপআপ করতে গিয়ে আইডি স্ক্যামের শিকার হই। নিজের এই প্রতিকূল অভিজ্ঞতা থেকেই একদিন সিদ্ধান্ত নিই—আমার মতো যারা বিভিন্ন রকম ভার্চুয়াল জটিলতায় পড়ছেন তাদেরকে সাহায্য করব। সেই থেকে কাজের শুরু। আমি সংকল্প করি—একজন সাইবার বিশেষজ্ঞ হব। বিপদে পড়া এই মানুষগুলোকে ফ্রি সাহায্য করার জন্যই আমি কাজ শেখা শুরু করি। আমার স্বপ্ন ছিল—ইন্টারনেটে বিপদে পড়া মানুষগুলোর সাহায্যে এগিয়ে আসা। এজন্য মিশতে হয়েছে অনেকের সাথে, ঘুরতে হয়েছে অনেক জায়গায়। নিজের প্রচেষ্টায় এক বছরের মাথায় একটি টিম প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের টিমের লক্ষ্য মানুষ যেন নিরাপদে অনলাইন দুনিয়া উপভোগ করতে পারে—সেই নিশ্চয়তা দেওয়া এবং সেভাবেই কাজ করছি।

এরই মধ্যে আবদুল রহমান ইন্টারনেটে হ্যারেসমেন্টের শিকার হওয়া অনেককে সহযোগিতা করেছেন। হ্যারেসমেন্ট এবং অশ্লীলতা কমিয়ে আনার মাধ্যমে একটি সুরক্ষিত এবং ব্যবহার উপযোগী ইন্টারনেট স্পেস তৈরি করতে তাদের প্রচেষ্টা ও অবদানের প্রশংসা করছেন অনেকে।

×