ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রেমিকার মৃত্যু শোক সইতে না পেরে প্রেমিকেরও আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী

প্রকাশিত: ২০:০৯, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রেমিকার মৃত্যু শোক সইতে না পেরে প্রেমিকেরও আত্মহত্যা

নিহত সিফাত। ছবি : সংগৃহীত

প্রেমিকার আত্মহত্যার শোক সইতে না পেরে প্রেমিকও আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শিবপুর উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামে গত বুধবার (২৫ এপ্রিল) রাতে। শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের ছাত্র সিফাত (১৯) এর সঙ্গে একই গ্রামের খলিল মিয়ার মেয়ে এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তানহার (১৫) সঙ্গে প্রেম ছিল। নিহত সিফাত ওই গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে।

গত ৩ এপ্রিল রাত দুইটার দিকে তানহা ঘরের ভেতর থেকে আর সিফাত জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার দৃশ্য দেখে ফেলে পার্শবর্তী এলাকার রাজুর ছেলে আঙ্গুর (২৫)। এ সময় আঙ্গুর তানহাকে কুপ্রস্তাব দেয়। সিফাত এতে নিষেধ করে। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আঙ্গুর সিফাতকে মারধর করে এবং মোটা অংকের টাকা দাবি করে। সিফাত এতে উত্তেজিত হয়ে আঙ্গুরকে কুপিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় শিবপুর থানায় একটি মামলাও হয়েছে। লোকলজ্জার ভয়ে এ ঘটনার তিন দিন পর গত ৬ এপ্রিল রাতে তানহা নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। 

সিফাতের বাবা ইব্রাহিম জানান, তানহার মৃত্যুর পর এ ঘটনা নিয়ে গ্রামীণ সালিশ দরবার হওয়ার কথা ছিল। সালিশ দরবারে আমাকে ও আমার ছেলেকে এটা করবে ওটা করবে বলে বিভিন্নভাবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার কারণে আমার ছেলে সিফাত মানসিক চাপ সইতে না পেরে তানহার মৃত্যুর প্রায় ২০ দিন পর গত ২৫ এপ্রিল রাতে ঘরের মধ্যে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

মৃত্যুর আগে ফেসবুকে সর্বশেষ স্ট্যাটাসে সিফাত লিখেন, তানহা আত্মহত্যা করে প্রমাণ করে গেল আমারে কতটা ভালোবাসে। আমিও প্রমাণ করে দিমু তানহারে আমি কতটা ভালোবাসি। কারো সঙ্গে ভুল করে থাকলে মাফ করে দিও। আর দেখা হবে না। সবাই দোয়া কইরো। শান্তিতে থাকি কিংবা অশান্তিতে দুজন যেন এক সঙ্গে থাকতে পারি। শেষ ইচ্ছা; তানহার কবরের পাশে আমাকে কবর দেওয়া হোক।

আরও লিখেন, আমি পরিস্থিতির শিকার। আমার কোনো কিছুর জন্য তানহার পরিবার বা আমার পরিবার দায়ী নয়। এমন কী আমার কোনো ভাই ব্রাদার বা বন্ধু ও দায়ী নয়। যা হবে আমার নিজের ইচ্ছেতেই হবে। সত্যি বলতে, আমার আর বাঁচার ইচ্ছে নাই। আমাকে যদি কেউ বাঁচিয়েও নেয়, আমি পুনরায় আবার আত্মহত্যার চেষ্টা করমু। প্লিজ আমাকে কেউ বাঁচানোর চেষ্টা কইরো না, বেঁচে থেকে আর কী হবে। যার জন্য বাঁচার কথা ছিল সে তো আর নাই।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবপুর মডেল থানার ওসি মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

 এসআর

×