ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

প্রশ্ন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের

দিনে জুয়া খেলে, রাতে মদ খায়, এমন নেতা কি বেছে নেওয়া যায়?

প্রকাশিত: ১৭:৩৭, ৭ মে ২০২৪

দিনে জুয়া খেলে, রাতে মদ খায়, এমন নেতা কি বেছে নেওয়া যায়?

মতবিনিময় সভা

মানিকগঞ্জ-৩ (মানিকগঞ্জ সদর এবং সাটুরিয়া) আসনের সংসদ সদস্য এবং সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘আমরা অনেক সময় দেখি, অনেকে দিনের বেলায় জুয়া খেলে, রাতে মদ খায়, এমন নেতা কি বেছে নেওয়া যায়? যায় না। সবাইকে সজাগ থেকে একজন চরিত্রবান লোককে বেছে নিতে হবে। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন আমরা কী বলতে চাচ্ছি।’

এসময় জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের যেসব অসুবিধা রয়েছে সেগুলো দূর করতে হলে সঠিক নেতা নির্বাচন করতে হবে। একটা পরিবারে যদি ভালো নেতা থাকে তাহলে সেই পরিবারটি ভালো থাকে। একটা ইউনিয়নে যদি ভালো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় তাহলে সেই ইউনিয়ন ভালো থাকে। তেমনি উপজেলার ক্ষেত্রে যদি একজন ভালো নেতাকে বেছে নিতে পারেন তাহলে উপজেলার মঙ্গল হবে।’

আজ সোমবার বেলা ১১টার  সদর উপজেলার গড়পাড়া এলাকায় শুভ্র সেন্টারে উপজেলার বিভিন্ন মসজিদের ঈমাম মোয়াজ্জিন এবং মাদ্রাসার অধ্যক্ষদের নিয়ে বিশেষ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।  

তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনের ইঙ্গিত করে জাহিদ মালিক বলেন, ‘যে নেতার শিক্ষা আছে, যে নেতা ধার্মিক, অন্যায় কাজ করে না, ঠিকমত ধর্মকর্ম পালন করে, মানুষের প্রতি ভালোবাসা আছে সেই ধরনের একজন নেতা যদি আমরা বেছে নিতে পারি তাহলে সমাজের মঙ্গল হবে। আপনারা যদি একজন ভালো এমপি বানাতে পারেন তাহলে ওই এলাকার উন্নয়ন হবে। এলাকার রাস্তাঘাট হবে, বিদ্যুৎ, হাসপাতাল হবে, স্কুল-কলেজ হবে। এই বিষয় গুলো মাথায় রেখেই আপনাদের নেতা নির্বাচন করতে হবে।’

ঈমাম-মোয়াজ্জিনদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ‘একজন নেতা বেছে নিতে ভুল করলে গোটা সমাজের ক্ষতি হয়। কাজেই একজন নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনাদের ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যে লোক আমাদের কাজ করে, যে আমাদের অনুভূতি বুঝবে, যে আমাদের সকল বিষয়ে সহযোগিতা করবে, যে আমাদের রাজনৈতিক বিষয়ে, ধর্মীয় বিষয়ে, অর্থনৈতিক বিষয়ে যে পাশে থাকবে, সেই ধরনের নেতা আপনাদের বেছে নিতে হবে।’

এ সময় ঈমামদের পক্ষে থেকে এক বক্তা বলেন, ‘আমাদের এমপি কী বলতে চেয়েছেন তার কথার ইশারাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ সদর ও সাটুরিয়া উপজেলার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা যে ভূমিকা পালন করেছি, সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমাদের এমপি যাকে ভালোবাসেন, যার প্রতি আস্থা রেখেছেন, তিনি আমাদের সকলের প্রিয় ইসরাফিল হোসেন ভাই। তিনি দীর্ঘদিন সদর উপজেলার দায়িত্ব পালন করেছেন। যিনি আমাদের এমপির মনোনীত। ইসরাফিল ভাইয়ের জন্য আমরা আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমাদের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’

মতবিনিময় সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ইসরাফিল হোসেনের ছোট ভাই শামীম হোসেনের সঞ্চালনায় গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফছার উদ্দিন সরকার, জাগীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ সহ মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার শতাধিক মসজিদের ঈমাম-মোয়াজ্জিন এবং মাদ্রাসার অধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা রির্টার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই।এ বিষয়ে কোন প্রার্থীর লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যেহেতু তিনি সংসদ সদস্য, তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া কথা বলা সমীচীন হবে না। এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে এমপি, মন্ত্রী বা সরকারি চাকরীজীবি, যারা অধিক গুরুত্বপূর্ণ তারা কোন প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না বলে জানান তিনি।’

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৯ মে তৃতীয়ধাপের মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। 

নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের আপন ফুফাতো ভাই মো. ইসরাফিল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা, জেলা ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ, মো. শামসুল হক, হাসিব উদ্দিন আহমেদ সেলিম, মো. আবুল হোসেন ও মো. রেজাউল করিম রাজাসহ মোট সাতজন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন।

এবি

×