খুলে দেওয়া হলো চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোডের উড়াল সড়ক

সাগরতীর ঘেঁষে ‘চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড’ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এক কিলোমিটার দীর্ঘ চারলেনের ফ্লাইওভার রবিবার খুলে দেওয়া হয়েছে। মহানগরীর উত্তর কাট্টলী থেকে জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম সংলগ্ন স্থানে রিং রোডের সঙ্গে মিশেছে এ ফ্লাইওভার। ফলে এটি পতেঙ্গায় অবস্থিত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ও কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেলের সঙ্গে নগরবাসীর যোগাযোগকে সুগম করবে। 
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ এই ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং চউকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁরা বলেন, সিটি আউটার রিং রোড বর্তমান সরকারের সময়ে আরেকটি মেগা প্রকল্প, যার বাস্তবায়ন কাজ শেষ হয়েছে বলা যায়। সাগরের তীর দিয়ে যাওয়া এ সড়ক ধরে বেশ আগে থেকেই যানবাহন চলাচল করছে। মূল শহর থেকে ওই রিং রোডে ওঠার জন্য ফিডার রোডগুলোর কাজ চলমান ছিল। এরমধ্যে উত্তর কাট্টলীর সাগরিকার এই ফিডার রোডটি খুলে দেওয়া হলো।

সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে ফিডার রোড-৩ নামের এই উড়াল সড়কটি। এটি চার লেনের সড়ক। ফলে যানবাহনগুলো নির্বিঘ্নে রিং রোডে পৌঁছতে পারবে। বঙ্গবন্ধু টানেল হয়ে রিং রোডে আগত যানবাহনসমূহ কম সময়ের মধ্যে সাগরিকা হয়ে শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে। নগরীর ব্যস্ততম বড়পুল, আগ্রাবাদ, হালিশহর, দেওয়ানহাট, পাহাড়তলী, খুলশী, জিইসি, ষোলশহর ২ নম্বর গেট,  বহদ্দারহাটসহ সন্নিহিত এলাকায় সহজে যেতে পারবে রিং রোডের গাড়িগুলো। একইভাবে এ ফিডার রোড ধরে এ এলাকার যানবাহনসমূহ ছুটবে রিং রোডের উদ্দেশে। এতে করে বিমানবন্দরে যাতায়াতের সময় অনেক কমে যাবে। রিং রোড দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলো নগরীর যানজট থেকে রক্ষা পাবে। পতেঙ্গার যানবাহনগুলো রিং রোডে উঠে গেলে নগরীর প্রধান সড়কগুলোতেও চাপ কমবে। 
প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড থেকে বড়পুল ও সাগরিকা হয়ে এ ফ্লাইওভার ব্যবহার করে খুব সহজে পতেঙ্গায় যাওয়া যাবে। এছাড়া উড়াল সড়কটি জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে যাতায়াতের জন্য একটি চমৎকার কানেক্টিভিটি হিসেবে কাজ করবে। 
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে চট্টগ্রামে যে কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে তারমধ্যে অন্যতম সিটি আউটার রিং রোড। এ রিং রোড পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট, বায়েজিদ লিং রোড ও বাকলিয়া এক্সেস রোড হয়ে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুতে মিলিত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি যেমন কমেছে, তেমনিভাবে বেড়েছে চট্টগ্রাম মহানগরীর নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ। পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য পতেঙ্গায় যেতে মানুষ এখন সিটি আউটার রিং রোডকেই বেছে নেয়। রিং রোডে ওঠার জন্য ফিডার রোডগুলো প্রস্তুত না হওয়ায় এতদিন নগর অভ্যন্তরে ভোগান্তি ছিল। অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ফিডার রোডটি চালু হয়ে যাওয়ায় যাত্রাপথ সহজ হয়ে গেল।