
খাল খননের ফলে বড়াইগ্রাম ও লালপুর উপজেলার চার বিলে জলাবদ্ধতা কেটে গেছে
পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকার কারণে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নাটোরের বড়াইগ্রাম ও লালপুর উপজেলার অন্তত চারটি বিলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল স্থানীয় কৃষকরা। সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দাদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় চারশ’ মিটার খাল খনন করে জলাবদ্ধতা নিরসন করেছে বড়াইগ্রাম উপজেলা প্রশাসন। এতে করে দুই উপজেলার প্রায় ২ হাজার একর জমির ফসল ও অন্তত পাঁচশ’ বসতবাড়ি জলাবদ্ধতার কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান হওয়ায় আনন্দিত ভুক্তভোগী কৃষক ও বাসিন্দারা।
বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাসেল জানান, দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবছর জেলার বড়াইগ্রাম ও লালপুর উপজেলার মহেশ্বর, টিটিয়া মাঝগ্রাম, কচুয়া ও সুন্দরবাড়িয়া মৌজার চারটি বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। এতে প্রায় ২ হাজার একর জমিতে ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হতো। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন কৃষকরা। এছাড়া স্থানীয়দের মতে, সৃষ্ট জলাবদ্ধতা কবলে পড়ে চারটি বিলের আশপাশের প্রায় ৫শ’ বসতবাড়ি। দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। সম্প্রতি ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও দাবির মুখে জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ নেয় বড়াই উপজেলা প্রশাসন।
সংকট নিরসনে স্থানীয়দের সর্বাত্মক সহযোগিতায় বড়াইগ্রাম উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় কচুয়া বিল থেকে পাশের সরকারি খাল পর্যন্ত প্রায় ৪শ’ মিটার খাল খনন করা হয়। আট ফুট প্রস্থ খাল খননে রাস্তার পাশের খাস জমি ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া, শামসুল ইসলাম তার ব্যক্তি মালিকানা দেড় বিঘা এবং ইসমাইল হোসেন দুই শতাংশ জমি জনস্বার্থে ছেড়ে দিলে তিন দিনের মধ্যেই খাল খনন সম্পন্ন হয়। গত রবিবার এর খনন কাজ শেষ হয়। গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, জলাবদ্ধতার কারণে দুই উপজেলার কৃষকরা জমিতে চাষাবাদ করতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। এবারও জলাবদ্ধতায় চারটি বিলের প্রায় ৮শ’ হেক্টর জমির ধান ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়। এছাড়া বিলের পানি উপচে জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে আরও কমপক্ষে পাঁচশ’টি বাড়ি।
এ সময় লালপুর উপজেলার মাঝগ্রামের আতাউর রহমানসহ একাধিক কৃষক জানান, বিলে আমার ১৭ বিঘা জমি রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ধান ডুবে যায়। এবারও অতি বৃষ্টিতে কিছু জমির ধান ডুবে গেছে, বেশির ধান জমির ধান ডোবার উপক্রম। তবে খাল খননের পর দ্রুত পানি নেমে যাচ্ছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোরহান উদ্দিন মিঠু জানান, সমস্যাটি জানার পর কাঁচা রাস্তা সংলগ্ন খাস জমি বের করা হয়েছে।
এছাড়া দৌলতপুর গ্রামের শামসুল ইসলাম তার ব্যক্তি মালিকানা দেড় বিঘা এবং তার ভাগিনা ইসমাইল হোসেনের বাড়ির ভিটার দুই শতাংশ জমি জনস্বার্থে ছেড়ে দিলে সরকারি খরচে খাল খনন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাসেল আরও জানান, জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে খালটি খনন করতে হয়েছে। এতে দুই উপজেলার বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতার সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধান হলো।