
চট্টগ্রামে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় নবনির্মিত বাকলিয়া এক্সেস রোড
চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এখন নতুন দিন। ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় পরিকল্পিত নগরায়ণের লক্ষ্যে নগরীর সড়কের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে একটি টেকসই জনবান্ধব ও বাসযোগ্য মহানগরী বাস্তবায়নে আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফিডার রোড এবং বাকলিয়া এক্সেস রোডসহ অনেক সড়ক নির্মাণ করেছে বর্তমান সরকার। এরই মধ্যে সিটি আউটার রিং রোডের সুফল পাচ্ছে বন্দর ও ইপিজেড-এয়ারপোর্ট এবং পতেঙ্গামুখী যানবাহনগুলো। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) জানিয়েছে, আগামী নভেম্বরে উদ্বোধন হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত বাকলিয়া এক্সসেস রোড। সিরাজদ্দৌলা রোড হতে শাহ আমানত ব্রিজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ (বাকলিয়া এক্সেস) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে মূল শহরের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য বিকল্প রাস্তা হিসেবে। এর ফলে মহানগরী ও উপজেলার লাখ লাখ মানুষ যানজট এড়িয়ে শহরে আসা-যাওয়া করতে পারবে।
শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়কের কালামিঞা বাজারের উত্তরপাশ থেকে নবাব সিরাজুদ্দৌলা রোডের চন্দনপুরা মসজিদ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুটপাত কাম সড়কটি নির্মাণ করেছে চউক। ২২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট প্রশস্তের সড়কটি চার লেনে নির্মিত হয়েছে। সড়কের দু’পাশে ড্রোন কাম ফুটপাত রয়েছে। উভয় পাশের ২০টি সংযোগ সড়কের সঙ্গে রাস্তাটিকে সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে বহু বছর ধরে বাকলিয়া ও চন্দনপুরার যে লক্ষাধিক মানুষকে জলাবদ্ধতা ও যানজটে শহরের একপ্রান্ত ঘুরে অন্যপ্রান্তে যেতে হতো, তাদের যাতায়াত সমস্যা লাঘব হচ্ছে। এ প্রকল্পের অধীনে সড়কটি মূল জমি থেকে ৩ ফুট উঁচু করা হয়েছে রোড। বেশ কয়েকটি কালভার্টের মাধ্যমে পানি চলাচলে যাতে বাধা না আসে এ ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয়েছে।
বাকলিয়া এক্সেস রোডে ৩৫ মি. পিসি ব্রিজ ও ১টি ১৪ মিটারের আরসিসি ব্রিজ করা হয়েছে। রয়েছে আর.সি.সি. বক্স কালভার্ট, ক্রস কালভার্ট ও ফুটপাত কাম ড্রেন এবং রিটেইনিং ওয়াল ও ডিভাইডার।
প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু মৌসুমী আবাসিকের একটি ভবনের কারণে আটকে যায় কাজ। পরে ভবনটি না ভেঙে প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন করে কাজ সম্পন্ন করা হয়। বর্তমানে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় এ সড়ক যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত। যদিও এখন সীমিত আকারে যান চলাচল করছে সড়কটিতে। তবে উদ্বোধনের পরই এটি শতভাগ যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
চউকের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস জনকণ্ঠকে বলেন, নগরের যানজট নিরসনে সিরাজউদ্দৌলা সড়ক থেকে শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটির শতভাগ কাজ সম্পন্ন। মাঝে কিছু জটিলতায় কাজ আটকে ছিল। পরে নকশা পরিবর্তন করে কাজ এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা আশাবাদী আগামী মাসেই এটি উদ্বোধন হবে। তখন পুরোপুরি এটি চালু করতে পারব। মন্ত্রণালয় দিনক্ষণ চূড়ান্ত করলেই উদ্বোধন পরবর্তী এ সড়ক উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এ সড়কটি চালু হলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে চকবাজার, আন্দরকিল্লা, আদালতপাড়ায় আসা মানুষ।
এ ছাড়া সিরাজদৌল্লা রোড থেকে বাকলিয়া এলাকার লাখ লাখ মানুষ সহজেই যাতায়াত করতে পারবে নগরীর একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত রাখতে এ সড়কটি আমরা ফ্লাড লেভেল থেকে বেশ ওপরে নির্মাণ করেছি। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বিবেচনায় প্রতিটি নির্মাণকাজ করা হয়েছে যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে। ফলে এ সড়ক চালু হলে নগরীতে যানবাহনে চাপ কমবে।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের পর থেকেই চট্টগ্রামে একের পর এক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যেগুলোর বাস্তবায়ন শুরু হলে পাল্টে যেতে থাকে বন্দরনগরীর চিত্র।