ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

মাত্র ৯০ দিনে মঙ্গলে: মার্কিন পদার্থবিদের বৈপ্লবিক এক যাত্রাপথের খসড়া!

প্রকাশিত: ১২:১৩, ২৫ জুন ২০২৫; আপডেট: ১২:১৪, ২৫ জুন ২০২৫

মাত্র ৯০ দিনে মঙ্গলে: মার্কিন পদার্থবিদের বৈপ্লবিক এক যাত্রাপথের খসড়া!

ছবি: সংগৃহীত

মাত্র ৯০ দিনে পৃথিবী থেকে মঙ্গলগ্রহে পৌঁছানোএ কি নিছক কল্পনা, নাকি বাস্তবতার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে বৈপ্লবিক এক আবিষ্কার? মার্কিন পদার্থবিদ জ্যাক কিংডনের প্রস্তাব ইতিমধ্যেই মহাকাশ গবেষণার প্রচলিত ধারণাগুলোতে নাড়া দিয়েছে। আর এতে স্পেসএক্সের অংশগ্রহণে প্রশ্ন উঠছে, এই আন্তঃগ্রহ মহাযাত্রার ভবিষ্যৎ কী?

বর্তমানে মঙ্গল অভিযানের সময়কাল গড়ে ৬ থেকে ৯ মাস, যা জ্বালানি, প্রযুক্তি এবং মানব স্বাস্থ্যের জন্য এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। কিন্তু কিংডনের প্রস্তাব বলছে, এই যাত্রা সপ্তাহের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা সম্ভবশুধু সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

৯০ দিনে মঙ্গল? সাহসী চিন্তা, বাস্তবসম্ভব পরিকল্পনা

পদার্থবিদ জ্যাক কিংডন সম্প্রতি একটি পদ্ধতি প্রস্তাব করেছেন, যা বর্তমানে বিদ্যমান প্রযুক্তি দিয়েই মঙ্গল পর্যন্ত যাত্রার সময় অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারে। এতে ব্যবহৃত হবে স্পেসএক্সের ‘স্টারশিপ’ রকেট, সঙ্গে থাকবে ক্রায়োজেনিক জ্বালানি পূরণ ও ‘হাইপারবলিক অ্যারোক্যাপচার’ নামের একধরনের গতিনিয়ন্ত্রণ কৌশল।

এই প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় একদিকে যেমন সময় সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদও অপ্টিমাইজড করা যাবে।

বর্তমানে মঙ্গলে পৌঁছাতে কেন লাগে এত সময়?

মঙ্গলে বর্তমান যাত্রাপথ সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশযাত্রায় মহাকাশচারীদের একদিকে যেমন বিকিরণের (radiation) ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হয়, অন্যদিকে দীর্ঘ সময় মাইক্রোগ্রাভিটিতে থাকার ফলে শারীরিক জটিলতাও দেখা দেয়। ফলে এই প্রস্তাব যদি কার্যকর হয়, তবে তা হবে এক যুগান্তকারী অগ্রগতি।

প্রযুক্তির বাস্তবতা ও প্রতিকূলতা

তবে পথ মোটেও মসৃণ নয়। কিংডনের পরিকল্পনার বড় চ্যালেঞ্জ হলো পৃথিবীর কক্ষপথে ক্রায়োজেনিক জ্বালানি পুনরায় ভরার প্রযুক্তিগত জটিলতা। এটি এখনো পরীক্ষাধীন এবং ঝুঁকিপূর্ণ। সফল হলে অবশ্য তা হবে মঙ্গল অভিযানের 'গেম চেঞ্জার'।

ফেরা হবে আরও কঠিন!

যাওয়া যেমন চ্যালেঞ্জিং, ফেরার পথ আরও জটিল। কিংডন বলেন, মঙ্গলে স্থানীয়ভাবে জ্বালানি উৎপাদনের জন্য একটি ফ্যাক্টরি স্থাপন করতে হবেযেখানে বরফ এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে রকেট জ্বালানি তৈরি হবে।

তবে এই পরিকল্পনা ব্যয়বহুল এবং ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। ফলে এই বিষয়ে এখনো কোনো সর্বসম্মত মত গড়ে ওঠেনি।

স্পেসএক্সএ অভিযানের কেন্দ্রে

এই পরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে এলন মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্স। মঙ্গল বসতির স্বপ্নে আগে থেকেই অনেক দূর এগিয়ে থাকা প্রতিষ্ঠানটি কিংডনের ধারণাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার সবচেয়ে সম্ভাব্য অংশীদার। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়এত বড় মিশন কি কেবল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে সফল করা সম্ভব?

স্পেস রেসে নতুন অধ্যায়?

মঙ্গলের পথে ৯০ দিনের এই সাহসী পরিকল্পনা নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে মহাকাশ গবেষণা জগৎকে। কি আগেসতর্কতা, নাকি উদ্ভাবন ও গতি?

একটি বিষয় স্পষ্টজ্যাক কিংডনের মতো পদার্থবিদদের চিন্তাই আজ মহাকাশ গবেষণার নতুন পথ দেখাচ্ছে। ভবিষ্যৎ বলে দেবে, এই ভাবনারা বাস্তব রূপ পাবে কিনা।

 

সূত্র: https://3dvf.com/en/a-physicist-proposes-a-route-to-mars-in-90-days-and-it-might-just-work/

রাকিব

×