
উত্তাল সাগর
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও চলতি পূর্ণিমার গোনের প্রভাবে অতি জোয়ারে সুন্দরবনের কটকা, কচিকালী, আলোরকোল, চরখালী, দুবলাচর-সহ করমজল পর্যটনকেন্দ্র তলিয়ে গেছে। বনের অভ্যন্তরে তিন থেকে চার ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলীয় নিম্ন এলাকার ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট ও চিংড়ি ঘের জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে। এ অঞ্চলের সকল নদ-নদীতে পানি বেড়েছে। এদিকে লঘুচাপের কারণে সাগর উত্তাল হয়ে ওঠায় ভর মৌসুমে ফের বন্ধ হয়ে গেছে ইলিশ আহরণ। প্রবল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে ইলিশ ধরার ট্রলারগুলো সাগর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে এসেছে। বর্তমানে শত শত ফিশিং ট্রলার পাথরঘাটা, মহিদপুর, নিদ্রাছখিনা ও পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মেহেরআলী, ভেদাখালী ও দুবলার বিভিন্ন খালে আশ্রয়ে রয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির বলেন, লঘুচাপ ও চলতি পূর্ণিমার গোনের প্রভাবে জোয়ারে করমজলে স্বাভাবিকের তুলনায় ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে উচুঁ টিলা তৈরী করায় বনের অভ্যন্তরে পানি আরও বেশি হলেও বন্যপ্রাণীর তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।’
মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ বলেন, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে মোংলা বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাতসহ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উপকূলে এমন বিরূপ আবহাওয়া আরও কয়েকদিন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা জেলেপল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ শনিবার বিকেলে জানান, বঙ্গোপসাগরের বড় বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে। বৃষ্টি হচ্ছে। প্রবল বাতাসে বাইরে নামার কোনো উপায় নেই। স্বাভাবিকের চেয়ে কমপক্ষে তিন ফুট পানিতে বনের অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। বনরক্ষীদের প্রায় সকলে সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান করছেন।
কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুরজিত চৌধুরী জানান, সুন্দরবনের মধ্যে কটকা এলাকা তুলনামূলক উঁচু। সেখানেও জোয়ারের পানিতে অফিস চত্বর ও বন তলিয়ে গেছে।
শরণখোলা সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, সাগরে প্রচ- ঢেউ হচ্ছে। ইলিশ আহরণের শত শত ট্রলার সুন্দরবন ও উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় এখন নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে।
শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক শেখ মাহাবুব হোসেন বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় সাগর আশান্ত হয়ে ওঠায় বহু ট্রলার সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয় নেওয়া জেলেদেরে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার বনরক্ষীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত সব দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই ও খালাস স্বাভাবিক রয়েছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ জানিয়েছে।
এস