
পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট বিলীন হয়ে যাচ্ছে
পদ্মা নদীর ভাঙনে দৌলতদিয়া তিন ও চার নং ফেরি ঘাট হুমকির মুখে রয়েছে। যে কোনো সময় বিলীন অথবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে তিন ও চার নং ফেরি ঘাট। রবিবার বিকেল তিনটার দিকে দৌলতদিয়া তিন ও চার নং ফেরি ঘাট এলাকা সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেলে তিন ও চার নং ফেরি ঘাটের মাঝে পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু হয়। এ সময় মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে প্রায় ৩০ ফুট নদী গর্ভে চলে যায়। তবে ভাঙন প্রতিরোধ না করলে দুটি ফেরি ঘাট, একটি মসজিদ, অসংখ্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং অর্ধশতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে চলে যাবে। ভাঙন আতংকে থাকবে মহাসড়ক।
এ সময় নদী ভাঙনের কবলে পড়ে গৃহহীন ছিদ্দিক কাজী বলেন, তিন ও চার নং ফেরি ঘাট পাশের গ্রামটি আমার নামে। এই গ্রামের বেশির ভাগ জমি আমার পরিবারের। কিন্তু প্রতিবছর পদ্মা নদীর ভাঙনের কারণে আমরা তিনবার নদী ভাঙনের কবলে পড়ি। এভাবে নদী ভাঙলে শুধু এই গ্রাম নয় দৌলতদিয়া ঘাট হুমকির মুখে পড়বে। সুতরাং এখনই সময় ভাঙন প্রতিরোধ করার। ফেরি ঘাট জামে মসজিদের ইমাম বলেন, নদী ভাঙনের কারণে ফেরি ঘাটের পাশে অবস্থিত এই মসজিদ অর্ধেক নদীতে চলে যায়। কোনো রকম এই মসজিদে নামাজ আদায় করা হচ্ছে। এবার এই ভাঙন প্রতিরোধ না করলে মসজিদের পুরো অংশ নদী গর্ভে চলে যেতে পারে।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সহিদুল ইসলাম জানান, রবিবার বিকেলে দৌলতদিয়া তিন ও চার নং ফেরি ঘাটের মাঝে কিছুটা ভাঙন শুরু হয়। তবে আমরা তাৎক্ষণিক ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করি।
কক্সবাজারে বালু তোলার মচ্ছব
স্টাফ রিপোর্টার কক্সবাজার থেকে জানান, সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু তোলার মচ্ছব চলছে। বাঁকখালীর নদীর মোহনা, চৌফলদ-ী, পোকখালী, তেঁতৈয়া নদী ও খালে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু তোলা হলেও রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছে প্রশাসন। চলমান বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের বালু বাণিজ্যের কারণে অবৈধ বালু সিন্ডিকেট অনেকটা প্রতিযোগিতায় নেমেছে। বালি তোলার কাজে ব্যবহার হচ্ছে অবৈধ ভলগেটও। চরম দায়সারা মনোভাব বিআইডব্লিউটি কর্তৃপক্ষের।
জানা যায়, বাঁকখালী নদীসহ বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হলে নেপথ্যে রয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক নয়ন শীল। বালু উত্তোলনকারী এই সিন্ডিকেটের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধার নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। প্রতি সপ্তাহে একবার এসে এই উপরি সুবিধা নেন বলেও অভিযোগ নয়ন শীলের বিরুদ্ধে। উপ-পরিচালক নয়ন শীলের দায়সারাভাবে বক্তব্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে ভারত চিকিৎসার জন্য যাওয়ার কথা বলে ফোন কেটে দেন তিনি। বক্তব্য নেওয়ার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার অফিসে একাধিকবার গিয়েও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অপর দিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডক্টর আব্দুল হামিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদকের বক্তব্য মোবাইল ফোনে শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এদের প্রধান দায়িত্ব এটি। এর মাঝেও এসিল্যান্ড এবং আমার নেতৃত্বে অনেকবার অভিযান পরিচালনা করেছি।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, বিআইডব্লিউটিএর লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে কয়েক লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করেছি। অনেক মালামালও জব্দ করেছি।
টাঙ্গন নদীর ভাঙন
নিজস্ব সংবাদদাতা, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও থেকে জানান, পীরগঞ্জ উপজেলার ৮টি নির্দিষ্ট স্থান থেকে এক শ্রেণির প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ি প্রতিনিয়ত টাঙ্গন নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে। অপরিকল্পিত ভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় টাঙ্গন নদী হুমকির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি জীব বৈচিত্র ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
এসব বিষয় উপজেলা প্রশাসন অবগত থাকলেও এখনও পর্যন্ত সন্তোষজনক দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বাজারদেহা, থুমনিয়া শালবনের উত্তর পার্শ্বে, ভবানীপুর, মশালডাঙ্গী বাজারের দক্ষিণে সরকারি আম বাগান সংলগ্ন, আমতলি ব্রীজের পশ্চিমে বনুয়াপাড়া, করনাই ও বৈরচুনায় টাঙ্গন নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে শত শত ট্রাক্টর যোগে বহন করে ব্যবসায়িরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দীর্ঘ দিন ধরে এসব প্রভাবশালী টাঙ্গন নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে। নাম মাত্র কয়েক জনের জরিমানা করা হলেও তারা প্রতিনিয়ত ওই সব স্থান থেকে বালু উত্তোলন করছে।
পীরগঞ্জ ভূমি অফিসের তিন ব্যক্তি এসব বালু ব্যবসায়িদের সাথে জড়িত বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এসব কর্মচারী বালু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসিক মোটা অংকের টাকা উৎকোচ নেন বলে খোজ নিয়ে জানা গেছে। প্রশাসন অভিযানে গেলে, কর্মচারীরা দ্রুত বালু ব্যবসায়ীদের মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেন। ফলে অভিযান সফল হচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির জানান, বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।