ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ক্ষতিগ্রস্ত চট্টগ্রাম ও বান্দরবানের বিস্তীর্ণ এলাকা

পানিবন্দি লাখো মানুষ

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ৯ আগস্ট ২০২৩

পানিবন্দি লাখো মানুষ

বুধবার বৃষ্টি কম হলেও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের অনেক এলাকার সড়ক ছিল পানির নিচে

পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে দক্ষিণ চট্টগ্রামে এখনো লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বুধবার চট্টগ্রামে টানা বর্ষণ না হওয়ায় জলজট ও পাহাড়ি ঢলের পানি কিছুটা কমেছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পানি কমায় ওই এলাকায় আংশিক যানবাহন চলাচল করলেও পরিপূর্ণভাবে তা চালু হয়নি। বুধবার তৃতীয় দিনের মতো বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। সব এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও পানীয় জলের সংকট। অন্যদিকে কক্সবাজারে বন্যার পানি কমতে থাকায় দৃশ্যমান হচ্ছে রেললাইন এবং তলিয়ে যাওয়া বাড়িঘর। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের।

পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বান্দরবান, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ এবং কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা থেকেও পানি নামতে শুরু করেছে। এবার অতীতের যে  কোনো সময়ের চেয়ে বন্যার ভয়াবহতা হয়েছে বেশি। জলজট ও পাহাড়ি ঢলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ক্ষতির পরিমাণ শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নির্ণয় করা এখনো কঠিন। বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মসজিদ-মন্দির, স্কুল-কলেজ, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা পানিতে সয়লাব হয়ে আছে। তলিয়ে রয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সহায়তার পরিমাণ একেবারেই কম। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে মোবাইল, টেলিফোন নেটওয়ার্ক এখনো বিপর্যস্ত। টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় ঘটেছে বান্দরবানে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম এবং বান্দরবানে এবারের বন্যা রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। পাহাড়ি ঢল ও বানের পানিতে প্লাবিত দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা। বুধবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও অবিরাম বর্ষণ ছিল না। 
বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২৭ মিলিমিটার। ফলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে পানি নামতে শুরু করে। তবে বুক সমান পানির নিচে ছিল চন্দনাইশ থেকে দোহাজারী এলাকার বিভিন্ন সড়ক। ফলে কিছু যানবাহন এগোতে পারলেও এখনো শত শত যানবাহন আটকে রয়েছে চন্দনাইশ এলাকায়। চট্টগ্রামে পাহাড়ি ঢলের কারণে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া এবং চন্দনাইশ-দোহাজারী এলাকার ইউনিয়নগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে বয়স্ক ও শিশুরা। বিশেষ করে খাদ্য সংকট। স্থানীয় সাংবাদিক হারুন অর রশিদ জানান, দোহাজারী ও সাতকানিয়ার বেশিরভাগ ইউনিয়নের এখন খাদ্য সংকট। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার রয়েছে। আমরা ঘুরে দেখেছি, মানুষ খাবারের জন্য কষ্ট পাচ্ছে। বিশেষ  করে বয়স্ক ও শিশুরা। বিদ্যুৎ না থাকায় কার্যত বিচ্ছিন্ন গ্রামগুলো। সুপেয় পানি না পাওয়ায় এবং পানি বিশুদ্ধকরণের ব্যবস্থা না থাকায় এসব এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপও দেখা দিয়েছে। 
পটিয়া থেকে জনকণ্ঠের প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানা গেছে। বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ (পটিয়া সদর দপ্তর) এক প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য জানিয়েছে। তিনদিন ধরে অন্ধকারে আছে পটিয়ার কয়েকটি গ্রামসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বেশকিছু গ্রাম। পাহাড়ি ঢল ও বন্যার কারণে এখনো শঙ্খ ও ডলু নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে ফসলের খেত, মৎস্য প্রজেক্ট ও পুকুর। ভয়াবহ এ দুর্যোগ মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। এদিকে চট্টগ্রামের রাউজানে হালদা নদীর শাখা খালে বন্যার পানির প্রবল স্রোতে ডিঙি নৌকা উল্টে নিখোঁজ হওয়ার ৩৪ ঘণ্টা পর তরুণ ব্যবসায়ী শাহেদ হোসেন বাবুর (৩৮) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার ভোর ৪টার দিকে লাশটি উপজেলার মোকামীপাড়া হালদা নদীর ছায়াচরে স্থানীয়রা দেখতে পায়। পরে সেখান থেকে এলাকার লোকজন লাশ শনাক্ত করে নিয়ে আসেন। 
অন্যদিকে বাঁশখালীতে পানিবন্দি ৩০ হাজার পরিবারে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ নেমে এসেছে। পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে দুই শতাধিক বসতবাড়ি। গৃহহীন হয়ে পড়েছে এসব পরিবারের সহ¯্রাধিক মানুষ। বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত, বাঁশখালীর চাম্বল, পৌরসভা এলাকা, খানখানাবাদ, শীলকূপ, শেখেরখীল, পুঁইছড়ী, কালীপুর, বৈলছড়ি, পুকুরিয়া, ছনুয়া, কাথরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে হাঁটু থেকে কোমর সমান নিমজ্জিত বসতবাড়ি ও বসতভিটায় জমে থাকা পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে পড়ছে মাটির বসতবাড়ি। এদিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের ৬০ ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি থাকলেও বর্তমানে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে।

কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে বেশি প্লাবিত এলাকা চকরিয়া ও পেকুয়া। এই দুই উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ২৫টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে ভারি বৃষ্টি না হওয়ায় চকরিয়া-পেকুয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ২ থেকে ৩ ফুট বন্যার পানি নেমে গেছে। রামুসহ অন্য উপজেলায়ও পানি নামা চলমান রয়েছে। জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক তথ্য বলছে, বন্যার কারণে কক্সবাজারে ইতোমধ্যে দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার মধ্যে সড়ক, কালভার্ট, কাঁচা রাস্তা সবচেয়ে বেশি।
এদিকে কক্সবাজারের চকরিয়ার দক্ষিণ সুরাজপুর এলাকা থেকে বুধবার দুপুরে এক বৃদ্ধের ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত দুইদিন ধরে নিখোঁজ এই বৃদ্ধ একই এলাকার মাস্টার আনোয়ার হোসাইন (৭০)। অপরদিকে বুধবার দুপুরে পূর্ব বড় ভেওলার হাজি রওশন আলী পাড়া সংলগ্ন রেললাইনের কালভার্টের পানিতে তলিয়ে যায় এক কিশোর। নিখোঁজ মোহাম্মদ আসিফ (১২) স্থানীয় আবদুল মালেক মানিকের ছেলে। 
ফেনী ॥ ফেনীর মুহুরী নদীর পানি সড়কে উঠে যাওয়ায় বুধবার সকাল থেকে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলগাজী বাজারের পর থেকে ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ফুলগাজীর প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে পানি নেমে কিছু নতুন নতুন এলাকায় প্রবেশ করছে। পানি নেমে গেলেও ভোগান্তি রয়ে গেছে। পানির প্রচ- বেগে বাঁধের আশপাশের ফুলগাজীর উত্তর বরইয়া, বণিকপাড়া, বিজয়পুর, কিসমত বিজয়পুর, বসন্তপুর, জগতপুর এবং পরশুরামের পশ্চিম অলকা, পূর্ব অলকা, নোয়োপুর, অনন্তপুর, চিথলিয়া, ধনীকুন্ডা, রামপুর, রতনপুর, দুর্গাপুর, জয়পুর, ঘনিয়ামোডা, সাতকুতিয়াসহ বেশ কিছু  গ্রামে বানের পানি ঢুকে পড়ে।
টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলের যমুনা নদীতে আবারও পানি বৃদ্ধি শুরু করছে। এ ছাড়াও জেলার সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে। ফলে নি¤œাঞ্চলের আবাদি জমির ধানের বীজতলাসহ রোপণকৃত ধানের চারা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকরা। টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে ১০ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার ছিল। যা এখনো বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে ২০ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর পানি কাউলজানী ও মির্জাপুর পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার, ফটিকজানী নদীর পানি নলচাপা পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার, ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ২৮ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর মধুপুর পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

এসব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ভূঞাপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর ও মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। দিশেহারা হয়ে পড়ছে নদীপাড়ের ভাঙন কবলিত শত শত মানুষ।
বাগেরহাট ॥ জেলার চিংড়ি চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েক হাজার চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ফলে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গেল কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জেলায় ৪ হাজার ২৩০টি মৎস্য ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। এতে চাষিদের কমপক্ষে এক কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলায় ৩৭৫টি, কচুয়ায় ৬৪০টি, শরণখোলায় ১০০টি, রামপালে ১ হাজার ৫৪০টি, মোরেলগঞ্জে ৮৫৫টি এবং মোংলায় ৭২০টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮২৫ একর জমিতে থাকা ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যের বাইরেও বেশকিছু ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে দাবি মৎস্য চাষিদর।
পিরোজপুর ॥ কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে পিরোজপুর সদর উপজেলার বাদুরা ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়কের কিছু জায়গায় ধস নেমেছে। সড়কের ভাঙনে বাদুরা প্রান্তের অনেক বাসিন্দাদের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকায় তাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান। এ ছাড়া ব্রিজের পাড়েরহাট প্রান্তে ভাঙনের কারণে জেলা প্রশাসন থেকে তৈরি করা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের ক্ষতির আশঙ্কা থাকায় অতি দ্রুত স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের কর্মকর্তাদের এই সংযোগ সড়কটি মেরামতের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। এদিকে নাজিরপুর শ্রীরামকাঠী বন্দর হতে আধাঝুড়ি সংযোগ সড়কটিতে গত কয়েকদিনে ভারি বর্ষণে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় এ রাস্তা দিয়ে জনধারণের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

পটুয়াখালী ॥ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ জানান, এ বছর করলার ভালো ফলন হয়েছে। অন্তত ১৩০ একর জমিতে আবাদ হয়েছে। কিন্তু টানা ভারি বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। মাত্র সাতদিন আগেও লাখো করলা ঝুলছিল গাছে। সবুজের আস্তরণে ঢাকা ছিল অধিকাংশ ফসলের মাঠ। মাইলের পর মাইলজুড়ে খেতের এই করলা কৃষকরা কাটছিল। পাইকারি বাজারে ২৫-২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছিল। সংলগ্ন পাখিমারা বাজারে ফি দিন ৭-৮ টন করলা বিক্রি হতো। কোটি কোটি টাকা বিক্রির স্বপ্নে বিভোর ছিল শতাধিক সবজি চাষি।

কিন্তু প্রকৃতির কাছে অসহায় হয়ে এখন এসব কৃষক নিঃস্ব হয়ে গেছেন। হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। চোখের সামনে গাছে ঝুলন্ত টনকে টন পোক্ত করলা গাছসহ নষ্ট হয়ে গেছে। নেতিয়ে কুকড়ে গেছে করলাসহ হাজার হাজার মরিচ গাছ। সবুজ সবজিতে ভরা মাঠ এখন বিবর্ণ হয়ে গেছে। পাঁচ দিনের বিরামহীন ভারি বর্ষণ আর ঝড়ো হাওয়ায় করলাসহ সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে আছে। 
২ মরদেহ উদ্ধার, সাতকানিয়ায় নিখোঁজ শিশু ॥ স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, চট্টগ্রামের দোহাজারীতে পানিতে তলিয়ে যাওয়া এক শিশুসহ দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সম্পর্কে তারা দাদা-নাতি। তারা হলেন আবু সৈয়দ (৮০) ও আনিস (১২)। বুধবার বিকেলে মরদেহ দুটি পৃথক স্থানে পাওয়া যায়। 
এদিকে, সাতকানিয়ায় নৌকা উল্টে নিখোঁজ হয়েছে সাড়ে তিন বছর বয়সের এক শিশু, যার সন্ধান বুধবারও মেলেনি। 
এদিকে, বাবার সঙ্গে নানাবাড়ি থেকে ফেরার পথে সাতকানিয়ায় পানির ¯্রােতে নৌকা উল্টে ভেসে গেছে সাড়ে তিন বছরের এক শিশু। তার নাম সানজিদা আকতার। শিশুটি সাতকানিয়ার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মিয়া বাড়ির আরিফ মঈনুদ্দিনের কন্যা। পারিবারিক সূত্র জানায়, মেয়েটি বায়না ধরেছিল চরতি এলাকায় নানুবাড়িতে বেড়াতে যাবে। বাবা তাকে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নানাবাড়িতে পানি ওঠায় গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে নানা তাকে নিয়ে নৌকায় চড়ে যাত্রা করেন মেয়েটির বাড়ি কাঞ্চনার উদ্দেশে। কিন্তু সুইপুরার ভেতরের রাস্তায় পানির ¯্রােতে নৌকা উল্টে ডুবে গেলে নিখোঁজ হয়ে যায় সানজিদা। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মেয়েটির সন্ধান মেলেনি।  
খাগড়াছড়ি ॥ বৃষ্টি না থাকায় পাহাড়ি ঢলের  পানি নামতে শুরু করেছে নিম্নাঞ্চল থেকে। এতে করে প্লাবিত এলাকার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কমেছে চেঙ্গী নদী ও আশপাশের ছড়া খালের পানি। বুধবার সকাল থেকে ঘরবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে মানুষজন। বাসা বাড়ি পরিষ্কার করে স্বাভাবিক করছেন তারা। এর আগে গত মঙ্গলবার দিনভর পানিবন্দি ছিল নদী ও ছড়া খালের তীরবর্তী  বেশ কয়কটি গ্রাম।

×