
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের প্রচার জমে উঠেছে
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের প্রচার জমে উঠেছে। মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীরা। পথসভা, মতবিনিময় আর গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে নগরীতে বসবাসকারী নি¤œ আয়ের বেকার মানুষ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। প্রার্থীদের মিছিল-মিটিং, লিফলেট বিতরণসহ নির্বাচনী নানা কাজে তারা ব্যস্ত।
সিসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর (নৌকা) পক্ষে গণসংযোগ করেছেন সিলেটের ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ। নগরীর সিটি মার্কেট, বন্ধরবাজার এলাকায় তারা গণসংযোগ করেন। এ সময় নেতৃবৃন্দ ব্যবসায়ী, পথচারী ও স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেন। তারা স্থানীয়দের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবহিত হন এবং ১৪ দলের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান মেয়র নির্বাচিত হলে তারা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে সে সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।
এ সময় নেতারা বলেন, গত প্রায় ১০ বছর ধরে সিলেট ছিল উন্নয়ন দুর্ভোগের নগরী। উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিত কাজকর্মের কারণে মানুষ কেবল দুর্ভোগই পোহাননি, অনেক প্রাণও ঝরেছে। তবে আনোয়ারুজ্জামান নির্বাচিত হলে অবশ্যই সবার সহযোগিতায় দুর্ভোগহীন উন্নয়ন উপহার দেবেন। সিলেটবাসীর আশা আকাক্সক্ষার বাস্তব প্রতিফলন ঘটবে, ইনশাআল্লাহ।
গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ জাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দলের মহানগর ও জেলা শাখার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
শাহী ঈদগা পয়েন্টে সভা ॥ নগরীর শাহী ঈদগা পয়েন্টে নির্বাচনী পথসভায় নৌকার মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান বলেছেন, আমি মেয়র নির্বাচিত হলে সিলেট হবে আধুনিক স্মার্ট সিটি। পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে সবুজ ও পরিছন্ন নগরী উপহার দেব। সন্ত্রাসী ও ভূমি দখলবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। তিনি নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি আপনাদের ভোটের অমর্যাদা করব না।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ মশাহিদ আলীর সভাপতিত্বে এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক মোস্তাক আহমদ পলাশের যৌথ পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দীন সিরাজ।
কালীবাড়িতে সভা ॥ নগরীর কালীবাড়ি পয়েন্টে পথসভায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, সিলেটবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিক। তাই তিনি উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু তার সদ্ব্যবহার না হওয়ায় আজ আমরা সামান্য বৃষ্টিতে হাবুডুবু খাই। আধ্যাত্মিক এই নগরীকে পর্যটনবান্ধব স্মার্ট এবং সবার জন্য বসবাসের উপযুক্ত একটা নগরী গড়ে তুলতে নৌকার কোনো বিকল্প নেই। সভায় সভাপতিত্ব করেন আব্দুর রাজ্জাক খান রাজা এবং সঞ্চালনা করেন সেলিম আহমদ সেলিম ও সুজেল আহমদ তালুকদার।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফার গণসংযোগ ॥ আইনি জটিলতা কাটিয়ে প্রচারে নেমেছেন মেয়র প্রার্থী মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা। তার হরিণ প্রতীকের সমর্থনে নগরীর জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, সুরমা মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তিনি গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, আমি এই নগরীকে একটি আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেব। নগরীর যানজট নিরসনে বিমানবন্দর থেকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে দক্ষিণ সুরমা কদমতলী পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করব।
হাতপাখার প্রার্থীর প্রচার ॥ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) ২৪, ৩১ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ এবং মুরাদপুরবাজার, মুক্তিরচক, মীরেরচক, মেজর টিলাবাজার, টিলাগড় পয়েন্ট ও মিরাপাড়ায় পথসভা করেছেন। পরে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে গোয়াইপাড়া ও ডলিয়া টিলাগাঁওয়ে উঠান বৈঠক করেন। গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন দলটির সিলেট জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ আমীর উদ্দীন, সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা ইমাদ উদ্দিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
লাঙলের প্রার্থীর গণসংযোগ ॥ জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙল) নগরীতে গণসংযোগকালে ২১ জুন লাঙল মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আমি নগরবাসীকে সেবা দিতে এসেছি। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখুন। আমি নির্বাচিত হলে নগরীর কাক্সিক্ষত উন্নয়ন করব, ইনশাআল্লাহ। বিগত সময়ে নগরীতে দুর্ভোগের উন্নয়ন হয়েছে। মানুষ সুবিধার পরিবর্তে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। পরিকাল্পিত উন্নয়ন ছাড়া নগরবাসী সুফল পাবেন না। আমি সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে নগরীর সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধান করব।