
ভার্চুয়াল জুয়া
সৈয়দপুরে ভার্চুয়াল জুয়ার কবলে ভবিষ্যত যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে ধাবিত হচ্ছে। এতে দেশীয় অর্থ পাচারের পাশাপাশি পরিবার ও সমাজে নানা অপরাধমূলক ঘটনা দিন দিন বাড়ছে।
জানা যায়, উপজেলার বোতলাগাড়ি, খাতামধুপুর, কাশিরাম বেলপুকুর, কামারপুকুর, বাঙ্গালীপুর ও সৈয়দপুর পৌর এলাকার ১৫টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় গড়ে উঠেছে ভার্চুয়াল জুয়ার এজেন্ট ও সাব এজেন্ট। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে এর টপআপ।
এ ছাড়াও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টপ আপ করে সমান তালে চলছে। বিভিন্ন কোম্পানির নামে রেজিষ্ট্রেশন করা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এই টাকা লেনদেন করা হচ্ছে। অনেকে অনলাইনে পাঠিয়ে দিচ্ছে এজেন্টরা।
জুয়াড়ীরা বিভিন্ন ফেইসবুক পেইজ বা পাবলিক গ্রুপে গুগল প্লে স্টোর অ্যাপসে জুয়া ও গেইম খেলার বিজ্ঞাপন ও কয়েক দিনে কোটিপতি হওয়ার প্রলোভনমুলক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেশের নামি-দামি গণমাধ্যমের লোগো এবং মন্ত্রীদের ছবিও ব্যবহার করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা সংস্থার এক সদস্য জানান, টাকার বিনিময়ে যে কোনো খেলাই হচ্ছে জুয়া। আর পুলিশ তাদেরকে ধরছে। তবে ধারা জটিলতায় মামলায় আদালতে হাজির হলে, তারা বেঁচে যায়। কারণ, দেশে অনলাইন জুয়ার কোনো আইন নেই। এভাবে বেটিং সাইটে টাকা লেনদেনে নিয়মিত প্রতারণা মামলায় মামলায় বেরিয়ে আসছেন ভার্চুয়াল জুয়ারীরা।
এ ছাড়া বিশ্বের নানা দেশ থেকে প্রায় দেড় শতাধিক জুয়ার সাইট রয়েছে। আর মহামারি করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা জরিয়ে পরেছে। আর এখন গ্রামে গঞ্জে নানা পেশার যুবক এই জুয়ায় মত্ত। আর ওই সাইটগুলোতে প্রবেশে বাংলাদেশি দ্বিগুণ টাকা দিয়ে ওই দেশের কয়েন বা ক্রেডিট কার্ড, ই-ব্যাংকিং ও হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হচ্ছে। এমনকি জুয়ারীরা অর্থ যোগানে সড়ক ও পাড়া মহল্লায় চুড়ি, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ মুলক কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে। বিগত এক বছরে এ শহরে কয়েকটি অটোরিক্সা, টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। যার বেশির ভাগ ঘটনায় ভার্চুয়াল জুয়াড়ীরা জরিত।
শহরের কলিম মোড়ের বাসিন্দা ও বাংলাদেশ জাতীয় এ দলের সাবেক ক্রিকেটার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে জুয়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সচেতনতা মুলক কর্মকান্ড এবং পাড়া- মহল্লার যুব সমাজের প্রতি নজরদারি রাখতে হবে।’
পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারের অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে সন্তানদের। তারা কোথায় যায়? কি করছে? এভাবে অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। না হলে এ দেশের ভবিষ্যতে প্রজন্ম মেধাশুন্য হবে।
সৈয়দপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রচারকারীরা দেশের বিভিন্ন নামি গণমাধ্যমের লোগো ব্যবহার করে ভার্চুয়াল জুয়ার লোভনীয় প্রস্তাব প্রচার করছে। সেখানে বিশ্বসেরা ক্রিকেটার, বিভিন্ন মন্ত্রীর ছবি সংযুক্তে ব্যবহার করছে। এতে লোভের বশবর্তি হয়ে অনেক স্কুল কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা ফাঁদে সর্বশান্ত হচ্ছে।’
এমএইচ