ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

ব্রিজ ধসে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে যাতায়াতকারীরা

সাখাওয়াত সাকিব, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)

প্রকাশিত: ০৮:১৪, ২২ জুন ২০২৫

ব্রিজ ধসে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে যাতায়াতকারীরা

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পাঁচ দশকের পুরনো একটি বেইলি ব্রিজ ধসে পড়ায় মিরসরাই ও ফটিকছড়ি উপজেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুই উপজেলার হাজারো মানুষ, ব্যবসায়ী ও যানবাহনচালক।

শনিবার (২১ জুন) বিকেলে পূর্ব গোভনীয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত ব্রিজটির নিচের অংশের মাটি পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে সরে গেলে ধসে পড়ে পুরো কাঠামো। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে এখনো হেঁটে ব্রিজ পার হচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, পাকিস্তান আমলে নির্মিত পুরনো পাকা ব্রিজটির ওপর ৫ দশক আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগ বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করে। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা সড়কটি দিয়ে নিয়মিত কাঠ, বাঁশ, শাক-সবজি, ফলমূল ও যাত্রী পরিবহন হতো। গত ৬ জুন পুরনো ব্রিজের একটি অংশ ধসে পড়লে বেইলি ব্রিজটির ওপর চাপ আরও বেড়ে যায়। এরপর শনিবার পুরোপুরি ধসে পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয় সমাজকর্মী আবু সাঈদ মো. মুছা বলেন, “আমরা নিজেরা বসে সিদ্ধান্ত নিই সংস্কারের ব্যবস্থা নিতে হবে। পৌরসভাকে জানালে তারা ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ হিসেবে সাইনবোর্ড দেয়। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই ব্রিজ ভেঙে পড়ে।”

সিএনজি অটোরিকশা চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “এখন রুট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আয় বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রীরাও দুর্ভোগে। দ্রুত সংস্কার না হলে আমরা আরও বিপদে পড়ব।” ব্রিজ ভেঙে পড়ার কারণে এখন বিকল্প সড়ক বাদামতলী-আমবাড়ীয়া হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘুরে প্রায় ৫ কিলোমিটার বাড়তি পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনকে।

মিরসরাই-ফটিকছড়ি সড়কের গুরুত্ব তুলে ধরে স্থানীয় ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম বলেন, “এই ৩৮ কিলোমিটারের সড়কটি দুই উপজেলার যোগাযোগের মূল মাধ্যম। এটি ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয় ফল, কাঠ, বাঁশ, শাকসবজি পরিবহনে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে।”

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল খায়ের বাদশা, দিদারুল আলম ও আব্দুল্লাহ আল আহাদ বলেন, “বৃষ্টির পানিতে ছড়ায় পানি বেড়ে গেলে গোড়ার মাটি নরম হয়ে যায়। বারবার সতর্ক করেও ব্যবস্থা হয়নি। এখন সবাই হেঁটে ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে।”

এ প্রসঙ্গে মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমি শনিবার বিকেলে ব্রিজটি পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে এবং সওজকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে লিখিতভাবে জানানো হবে।”

চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) আঞ্চলিক প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “ব্রিজটি সংস্কারের প্রস্তুতি আমাদের ছিল। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করা যায়নি। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।”

আঁখি

×