
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
কটিয়াদীতে তরুণদের নিয়ে গড়া একটি মানবিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'কটিয়াদী রক্তদান সমিতি'। এই সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক হচ্ছে বদরুল আলম নাঈম। যাকে এ অঞ্চলের সবাই মানবতার ফেরিওয়ালা নামেই চিনে থাকেন।
মূলত এই সংগঠনের কার্যক্রমগুলো হচ্ছে সমাজসেবামূলক কাজে নিজেদের সর্বদা নিয়োজিত রাখা। এই সংগঠনের অন্যতম কাজ হচ্ছে মুমূর্ষু রোগীদের রক্তদান করা। এছাড়াও সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, শীতার্তদের শীতবস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করা, বন্যার্তদের পাশে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে দুর্গম স্থানে পৌঁছে দেয়া, সমাজের হতদরিদ্রের কর্মসংস্থানের জন্য নিজ অর্থায়নে সেই সব মানুষদের অর্থ দিয়ে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা।
এছাড়াও গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠাগার তৈরি করে তরুণদের বইপ্রেমী করে গড়ে তোলাও তার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রতিটি গ্রামের শিশুদের খেলাধুলায় মনোনিবেশ করার জন্য নিজ অর্থায়নে খেলার সামগ্রী কিনে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিশেষ অবদান রাখছেন।
পবিত্র রমজান আসলে সারা মাসই ইফতার সামগ্রী নিয়ে ইফতারের আগে সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে পথে পথে ঘুরে পথচারী রোজাদারদের হাতে সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া সহ সমাজের অসহায় প্রতিটি পরিবারের কাছে ঈদ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া সহ এই সংগঠনের সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রমের যেনো নেই কোনো শেষ।
এখন বর্ষাকাল তাই পাখিদের কথা বিবেচনা করে প্রতিদিনই নিজ অর্থায়নে কটিয়াদীর আনাচে কানাচে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছে। বিশেষ করে প্রতিবছর এসময় ঝড়বৃষ্টির কারণে পাখিদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেদিকেও তার সুদৃষ্টির যেন কমতি নেই।
তাই এসময় পাখিদের বাসস্থানের কথা মাথায় রেখে কটিয়াদীর এমন কোনো গাছপালা নেই যেখানে পাখিদের বাসস্থানের ব্যবস্থা না করছেন। পাখির আবাসস্থল (অভয়ারণ্য) তৈরির জন্য কর্মীদের নিয়ে গাছে গাছে মাটির কলসি স্থাপন করা হচ্ছে। এটি পাখিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করতে সাহায্য করে এবং তাদের প্রজননেও সহায়তা করে। পাখিদের অভয়ারণ্যের জন্য প্রতিবছরই এই কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।
বেশ কিছু পাখি আছে যারা মাটির হাঁড়িতে বসবাস করতে পছন্দ করে। এর মধ্যে বাবুই পাখি অন্যতম, যারা সাধারণত তাল, নারকেল, খেজুর বা রেইনট্রি গাছের ডালে বাসা বাঁধে। এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে চড়ুই, টুনটুনি, এবং অন্যান্য ছোট পাখিরাও মাটির হাঁড়িতে আশ্রয় নেয়, বিশেষ করে যেখানে প্রাকৃতিক আবাসস্থল কমে গেছে বা যেখানে মানুষের তৈরি করা বাসা সহজেই পাওয়া যায়।
মাটির হাঁড়ি পাখিদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় হতে পারে, বিশেষ করে প্রতিকূল আবহাওয়ায়। যেমন এসময় অতি ঝড়বৃষ্টির কারণে গাছপালার ডালপালা ভেঙে তাদের বাসস্থান ধ্বংস হয়ে যায়।
অল্প কিছু সদস্য নিয়ে গড়া এই সংগঠনের আজ হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী সদস্য তৈরি হয়েছে। বিনা স্বার্থে শুধুমাত্র মানবসেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখাই এই সংগঠনের প্রতিটি সদস্যের প্রধান লক্ষ্য।
এক সময় এই সংগঠনের সদস্যদের কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতা ছিল শুধুমাত্র কিশোরগঞ্জ জেলার গণ্ডির মধ্যে। এখন এই সংগঠনের সদস্যদের সাথে সাথে কার্যক্রমের পরিধি বেড়ে রাজধানী ঢাকার অলিতেগলিতে পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
নোভা