ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

জীবনের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে অবৈধ পথে বাংলাদেশে ॥ ফিরতে গিয়ে বিপত্তি

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ১৫:২৮, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩; আপডেট: ১৫:৩০, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩

জীবনের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে অবৈধ পথে বাংলাদেশে ॥ ফিরতে গিয়ে বিপত্তি

জমিলা বেওয়া

ভারতীয় মন্ডল জমিলা বেওয়া (৭৮) বার্ধক্যজনিত একজন রোগী। তার জীবনের শেষ ইচ্ছা ছিল মৃত্যু আগে বাংলাদেশে বসবাসরত স্বজনদের সাথে দেখা করবেন। কিন্তু অর্থের অভাবে বৈধভাবে বাংলাদেশে আসতে পারছিলেন না। শেষ ইচ্ছা পূরণ করতেই তিনি অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ৩ মাস আগে বাংলাদেশের মেহেরপুরে প্রবেশ করেন। এরপর ওঠেন শহরের কাসারিপাড়ার ভাই মৃত রহিম বকসের বাড়িতে। ভাইয়ের সন্তান আর নাতিদের সাথে ভালো সময় কাটছিল তার। ৩ মাস যেতেই ভারতের বাড়ীতে ফিরে যাওয়ার জন্য তিনি ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। গত ২২ জানুয়ারি বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার মুন্সিপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে ফিরে যাওয়ার সময় সীমান্তে বিজিবি সদস্যদের কাছে আটক হন।

বুধবার রাত ১০ টায় ৬বিজিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ঘটনার সময় মুন্সিপুর সীমান্তের ৯৩ নম্বর প্রধান খুঁটির কাছে জমিলাকে দেখে বিজিবি সদস্যদের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ওই বৃদ্ধা জানান, তার বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার পাথরাদহ গ্রামের পশ্চিমপাড়ায়। স্বামীর নাম মৃত ফজলু। বৃদ্ধা বার্ধক্যজনিত রোগী হওয়ায় মানবিক কারণে বিজিবির পক্ষ থেকে ওই নারীকে ভারতে স্বজনদের কাছে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। পরে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বুধবার সন্ধ্যায় স্বজনদের কাছে ফিরে যান জমিলা। 

এর আগে মানবিক দিক বিবেচনা করে জমিলাকে ভারতে যেতে কোনো বাধা দেয়নি বিজিবি। তবে সীমান্তের ভারতীয় অংশে কর্তব্যরত ৮২ বিএসএফের মহাখোলা ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে ভারতে প্রবেশে বাধা দেন। পরে বিজিবির টহল দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হলে বিএসএফের কর্মকর্তারা জানিয়ে দেন, ওই নারীকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে। এ অবস্থায় বিজিবি মুন্সিপুর কোম্পানি কমান্ডারের পক্ষ থেকে বিএসএফের মহাখোলা কোম্পানি কমান্ডারকে আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের জন্য চিঠি দেন।

এদিকে বৃদ্ধা জমিলাকে ফেরত নেওয়ার জন্যে বিজিবির যশোর রিজিয়নের নোডাল অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আনোয়ারুল মাযহার ২৪ জানুয়ারি বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার নোডাল অফিসার ডিআইজি শ্রী অমিরেশ কুমার আরিয়াকে অনুরোধ করেন। এরপর বুধবার বিএসএফের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়। ওই দিন সন্ধ্যায় মুন্সিপুর সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে জমিলাকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

৬ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ মো. ইশতিয়াক বলেন, ভারতীয় নাগরিক জমিলা বেওয়াকে আটকের পর থেকে হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছিল। তাকে নিরাপদে সন্ধ্যায় ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

টিএস

×