স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী॥ নীলফামারী সদর উপজেলায় দেখা মিলল বিপন্ন প্রজাতির ছোট খাটাশ। যদিও এ প্রাণীটি নীলফামারী মানুষের কাছে বাঘডাশ নামে বেশ পরিচিত। তবে এদেশে ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের রক্ষিত বন্যপ্রাণীর তালিকার তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
এলাকাবাসী জানায় বুধবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে বিপন্ন প্রজাতির এই খাটাশের দেখা মেলে সদরের চড়াইখোলা ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম কুচিয়ারমোড় মাঝাপাড়া গ্রামে ভুট্টা ক্ষেতে। গলায় একটি ঘন্টা বাধা ছিল। ঘন্টার শব্দ শুনে এলাকাবাসী এ বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীটিকে প্রথমে দেখতে পান। খাদ্য সংকটে প্রাণীটি দুর্বল অবস্থায় সেখানে ঘোরাফেরা করছিল।
ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ভবেশ ও নরেশ সহ অনেকে জানান, আড়াই ফুটের মতো দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৩ কেজি ওজনের এ প্রাণীটি দেখতে অনেকটা হিংস্র ধরনের। তবে ওই প্রাণীটাকে দেখে অনেকটা ক্ষুধার্ত বলে মনে হয়। আমাদের দেখে পালানোর চেস্টা করছিল। কিন্তু শরীর দুর্বল থাকায় সেটি পালাতে পারেনি। আমরা তাকে ধরে নিরাপদে নিয়ে আসি। তাকে খাদ্য খাইয়ে সুস্থ করে তুলি। এরপর আজ বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) প্রাণীটিকে নিরাপদে ছেড়ে দিলে সে দৌড়াতে দৌড়াতে অজানার পথে চলে যায়। এর পায়ের ছাপ ঠিক যেন চিতাবাঘের মতো বড় বড়।
নীলফামারী বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মোনায়েম বলেন,বিপন্ন এ প্রাণীর ব্যাপারে, ছোট খাটাশ একটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। এ ধরণের খাটাশ গন্ধগোকুল নামেও এলাকাভেদে পরিচিত হলেও অনেকে বাঘডাশ বলে চেনে। দেখতে কিছুটা চিতাবাঘের মতো। এরা গাছে চড়তে পটু।মাটিতেও সমান সচল, ভালো দৌড়বিদ এবং অল্প জায়গায় আত্মগোপনে পারদর্শী। ওজন তিন থেকে পাঁচ কেজি পর্যন্ত হয়। শরীরের মাপ লেজ বাদে ৯০ থেকে ৯৩ সেন্টিমিটার, লেজ ৩০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। নিরীহ স্বভাবের এ প্রাণীটি বাঁশবন-ঘাসবন, শুকনো কাশবন, খড়বন, জালিবেতঝাড়, ইটের পাঁজা ও ঝোপঝাড় হচ্ছে খাটাশের আবাসস্থল।তিনি আরও জানান, প্রায় সব ধরনের ফল, বিভিন্ন ছোট প্রাণী ও পতঙ্গ, তাল-খেজুরের রস ইত্যাদি তাদের বেশ পছন্দের খাবার। তবে তারা গাছে উঠতে পারলেও মাটিতেই শিকার ধরে এবং ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, ছোট পাখি, টিকটিকি, কীটপতঙ্গ ও সেগুলির লার্ভা খেয়ে থাকে। গৃহস্থের হাঁস-মুরগি চুরি করে। দেশভেদে এদের খাবারের তারতম্য দেখা যায়। কফি এদের অন্যতম প্রিয় একটি খাদ্য। খাটাশটি এলাকাবাসীর সহযোগীতায় পুনরায় ছেড়ে দেয়া হয়।