লর্ডসে অবিস্মরনীয় সেঞ্চুরিতে ‘ম্যান অব দ্য ফাইনালের’ পুরস্কার হাতে প্রোটিয়া ওপেনার, ছবি: ক্রিকইনফো
টেস্ট, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি—ক্রিকেটের যে সংস্করণের কথাই বলুন, দক্ষিণ আফ্রিকা খেলাটির অন্যতম পরাশক্তি। কিন্তু সেই ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে আইসিসি নকআউট ট্রফি (মিনি বিশ্বকাপ) ছাড়া আজকের (শনিবার) আগপর্যন্ত কোনো বৈশ্বিক ট্রফি ছিল না প্রোটিয়াদের।
অবশেষে ২৭ বছর পর প্রোটিয়াদের মাথায় বিশ্বসেরার মুকুট, ক্রিকেট-তীর্থ লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক মেইস বা গদা তুলে ধরলেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। দক্ষিণ আফ্রিকা বলতে গেলে একা হাতে শিরোপা জেতালেন অ্যাইডেন মার্করাম।
লর্ডসে ইতিহাসগড়া ফাইনালে খেললেন ১৩৬ রানের অবিস্মরণীয় এক ইনিংস। তাও আবার নিজেদের দ্বিতীয় আর ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে! অকেশনাল স্পিনে নিলেন ২ উইকেট। পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাড়ে তিন দিনেই এলো ৫ উইকেটের বড় জয়।
প্রায় ৬ মাস পর বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ খেলতে নেমেছেন এ ম্যাচ দিয়ে। প্রথম ইনিংসে ভালো কিছু করা দূরে থাক, ৪ বল খেলে শূন্য রানে ফিরেছেন। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ২১২ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকাও অলআউট মাত্র ১৩৮ রানে। ৭৪ রানে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে তোলে ২০৭ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮২ রানের।
বড় মঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকার চাপে ভেঙে পড়ার অতীত ইতিহাস ঘেঁটে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন—নাহ্, এবারও হলো না! আরও একটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের শিরোপার খুব কাছে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে প্রোটিয়াদের। তাড়া করতে নেমে ৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা, ৭০ রানে দ্বিতীয় উইকেট। সে সময়ও অনেকেই মনে করছিলেন—এই বুঝি ভেঙে পড়ছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপ!
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার এই দলটিতে যে আছেন একজন ইতিবাচক, আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্ববান মানুষ। যিনি দলের সবচেয়ে প্রয়োজনে, ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে নিজের চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারেন।
২০১৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অসাধারণ নেতৃত্ব আর দায়িত্ববান ব্যাটিংয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকাকে জিতিয়েছিলেন শিরোপা। এরপর গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্সে দলকে তুলেছিলেন ফাইনালে। যদিও ফাইনালে ভারতের সঙ্গে পেরে ওঠেনি ‘চিরকালের চোকার’ দক্ষিণ আফ্রিকা। ফাইনালে মার্করাম নিজেও ব্যাট হাতে ছিলেন ব্যর্থ।
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দায় যেন মার্করাম শুধরালেন লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। অবিস্মরণীয় সেঞ্চুরিতে হয়ে উঠলেন ইতিহাস গড়া জয়ের নায়ক।
মিরাজ/ইমরান
