
ছবি: সংগৃহীত
ফুটবল বিশ্ব এখন দারুণ এক রোমাঞ্চকর মুহূর্তের অপেক্ষায়। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫-এর নকআউট পর্বে লিওনেল মেসির বর্তমান ক্লাব ইন্টার মিয়ামি মুখোমুখি হতে চলেছে মেসিরই প্রাক্তন দল এবং বর্তমান উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দল প্যারিস সেন্ট-জার্মেই (পিএসজি)-এর। এই ম্যাচটি শুধু একটি ফুটবল ম্যাচ নয়, এটি মেসি এবং তার প্রাক্তন ক্লাবের মধ্যে এক আবেগঘন ও প্রতিশোধের লড়াইও বটে।
ইন্টার মিয়ামি গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাসের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি সিটল সাউন্ডার্সকে ২-০ গোলে হারিয়ে নকআউট পর্বে মেসির ইন্টার মিয়ামির প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেদের জায়গা করে নেয়।
মেসির জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ
মেসি পিএসজি ছাড়ার সময় ফরাসি ক্লাবটির সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না। সেই সম্পর্কের ফাটল এবং অভিমানের কারণে পিএসজিকে তিনি 'সবচেয়ে অপছন্দের ক্লাব' বলেও আখ্যায়িত করেছিলেন। তাই এই ক্লাব বিশ্বকাপে প্রাক্তন দলের বিপক্ষে নামা মেসির জন্য ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তার সতীর্থ জর্দি আলবাও জানিয়েছেন, মেসি এই ম্যাচটি জিততে মরিয়া।
ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫ একটি নতুন ফরম্যাটে ৩২টি দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা ফুটবল অনুরাগীদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি শহরে এই প্রতিযোগিতার সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
ইন্টার মিয়ামির অপ্রত্যাশিত উত্থান
চলতি ক্লাব বিশ্বকাপে ইন্টার মিয়ামিকে অনেকেই 'আন্ডারডগ' হিসেবে ধরে নিয়েছিল। স্বয়ং ক্লাবটির ফুটবলার ও কর্মকর্তারাও স্কোয়াডের গভীরতা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। মিডফিল্ডার সার্জিও বুস্কেটস বলেছিলেন, "এই প্রতিযোগিতার জন্য আমরা প্রস্তুত নই।" তবে, সব বাধা পেরিয়ে তারা গ্রুপ 'এ' থেকে দ্বিতীয় হয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিয়ে ইতিহাস গড়েছেন। মেসি এবং লুইস সুয়ারেজ অবশ্যই দলের মূল তারকা, তবে ইন্টার মিয়ামি একাডেমি থেকে উঠে আসা নোয়া অ্যালেন, ইয়ান ফ্রে এবং বেঞ্জামিন ক্রেমাসচির মতো তরুণরাও তাদের পারফরম্যান্স দিয়ে সবার নজর কেড়েছেন।
আগামী ২৯ জুন যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার মেরসিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়ামে পিএসজির বিপক্ষে মাঠে নামবে মেসির ইন্টার মিয়ামি।
মেসি কি পারবেন তার প্রাক্তন দলকে হারাতে?
মেসির ক্যারিয়ারে এটি এক নতুন অধ্যায়। পিএসজি ছাড়ার পর এই প্রথম তিনি তাদের মুখোমুখি হচ্ছেন। একদিকে যেমন তার প্রাক্তন ক্লাবের বিরুদ্ধে জয় তার জন্য ব্যক্তিগত তৃপ্তি বয়ে আনবে, তেমনি ইন্টার মিয়ামির মতো একটি তুলনামূলক নতুন ক্লাবের হয়ে ইউরোপিয়ান জায়ান্টকে হারানো হবে এক ঐতিহাসিক অর্জন। মেসির ম্যাজিক এবং তার সতীর্থদের পারফরম্যান্সই নির্ধারণ করবে এই ম্যাচে ইন্টার মিয়ামি কতটা সফল হয়।
মেসি কি এইবার পারবেন তার প্রাক্তন দলের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে আনতে এবং ক্লাব বিশ্বকাপে ইন্টার মিয়ামিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে? ফুটবলপ্রেমীরা অধীর আগ্রহে সেই উত্তরের অপেক্ষায়।
সাব্বির