
চাঁদ—যার দিকে তাকিয়ে আমরা প্রেম খুঁজি, কবিতা লিখি, স্বপ্ন বুনি। কিন্তু এই রহস্যময় উপগ্রহের ভেতরে কী লুকিয়ে রয়েছে? সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে নতুন করে মাঠে নেমেছেন বিজ্ঞানীরা। আর এবার তারা যা পেলেন, তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো!
চাঁদের ভেতরে কী আছে?
সম্প্রতি ফরাসি গবেষক আর্থার ব্রিয়দের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন—চাঁদের অভ্যন্তরেও রয়েছে এক কঠিন লোহার মতো কোর বা কেন্দ্র। একেবারে পৃথিবীর মতো! এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক সাময়িকী 'নেচার'–এ।
কোথা থেকে এল এত তথ্য?
এই চাঞ্চল্যকর আবিষ্কারের পেছনে রয়েছে পুরোনো অ্যাপোলো মিশনের সময় সংগৃহীত সিসমিক ডেটা এবং লেজার রেঞ্জিং প্রযুক্তি। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চাঁদের কেন্দ্রেও রয়েছে দুই স্তরের গঠন—
1. একটি কঠিন অভ্যন্তরীণ কোর – প্রায় ২৫৮ কি. মি. ব্যাসার্ধ বিশিষ্ট
2. একটি তরল বাইরের স্তর – ব্যাস প্রায় ৩৬২ কি. মি.
চাঁদের পুরো গঠন জুড়ে এই কোর প্রায় ১৫% জায়গা দখল করে রয়েছে।
ভেতরে কী ধরনের পদার্থ?
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, চাঁদের এই কেন্দ্র লোহার মতো ভারী ধাতব পদার্থে গঠিত। সেখানে ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে প্রায় ৭,৮০০ কেজি! যদিও এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি কোর পুরোপুরি কী দিয়ে তৈরি।
পৃথিবীর সঙ্গে সাদৃশ্য?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাঁদের এই অভ্যন্তরীণ গঠন অনেকটাই পৃথিবীর মতো। যেমন—পৃথিবীর কেন্দ্রেও রয়েছে কঠিন ও তরল স্তরে বিভক্ত একটি কোর। চাঁদের অভ্যন্তরে এমন গঠন থাকার মানে, এর ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস ও বিবর্তন আরও গভীর এবং জটিল, যা এতদিন বিজ্ঞানীদের ধারণার বাইরে ছিল।
কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ?
🔹 এই আবিষ্কার ভবিষ্যতের চাঁদ-ভিত্তিক গবেষণা ও মহাকাশ অভিযানে দিকনির্দেশনা দেবে।
🔹 চাঁদের গঠন বুঝলে পৃথিবীর ইতিহাসও আরও পরিষ্কার হবে।
🔹 পাশাপাশি, অন্যান্য উপগ্রহ বা গ্রহের ভিতর নিয়েও তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা সহজ হবে।
চাঁদ আর শুধু রোমান্টিক কবিতার বিষয় নয়, বরং এখন মহাবিশ্বের একটি গঠনগত রহস্য! তার বুকের গভীরে লুকিয়ে আছে এমন কিছু, যা ভবিষ্যতের মহাকাশ গবেষণায় বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
Mily