
ছবি: সংগৃহীত
আজকের বিশ্বে প্রায় ২২০ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানির অভাবে দিন কাটান। শুধু আমেরিকাতেই প্রায় ৪৬ মিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানি পান না। এই বাস্তবতায় এমআইটি (MIT)-এর বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন এক অবিশ্বাস্য যন্ত্র—যেটি জানালার আকারের, চলার জন্য বিদ্যুৎ বা সৌর শক্তির দরকার হয় না, আর এটি বাতাস থেকে পানির বাষ্প শুষে বিশুদ্ধ পানি তৈরি করতে পারে।
এই যন্ত্রটিকে বলা হচ্ছে ‘অ্যাটমোসফেরিক ওয়াটার হারভেস্টার’। এটি প্রথমবারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে শুষ্ক অঞ্চল ডেথ ভ্যালি-তে পরীক্ষামূলকভাবে সফলভাবে চালানো হয়েছে। দিনে এটি ১৬০ মিলিলিটার পর্যন্ত পানি সংগ্রহ করতে পারে, যা ভবিষ্যতে কয়েকটি প্যানেল একত্রে বসিয়ে একটি বাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় পানি জোগান দিতে পারবে।
যন্ত্রের গঠন ও কাজের ধরন
এই যন্ত্রটি তৈরি হয়েছে বিশেষ এক ধরনের ‘হাইড্রোজেল’ দিয়ে—একটি জেল জাতীয় পদার্থ, যা দেখতে ছোট ছোট কালো ডোম আকৃতির। এটি বাতাসের পানি বাষ্প শুষে নেয়। পরে এই বাষ্প ঠাণ্ডা গ্লাসের গায়ে ঘনীভূত হয়ে পানি হয়ে নিচে পড়ে যায় এবং একটি পাইপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা যায়।
যন্ত্রটি পুরোপুরি নিজে নিজেই চলে। এতে না আছে ব্যাটারি, না আছে বিদ্যুতের দরকার। শুধু রাতে বাষ্প জমায় এবং দিনে সূর্যের তাপে পানি বের হয়।
অন্যান্য পদ্ধতির চেয়ে ভালো কীভাবে?
আগের অনেক জল সংগ্রাহক যন্ত্রে লিথিয়াম ক্লোরাইড নামের লবণ ব্যবহার করা হতো, যা পানি নিষ্কাশনের সময় লবণাক্ততা বাড়িয়ে দিত। কিন্তু এমআইটির নতুন যন্ত্রে গ্লিসারল ব্যবহার করা হয়েছে, যা লবণকে আটকে রাখে এবং পানিকে নিরাপদ রাখে।
তাদের সংগৃহীত পানির গুণমান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিরাপদ মাত্রার নিচে রয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান গবেষক অধ্যাপক শুয়ানহে ঝাও বলেন, “আমরা এমন এক যন্ত্র বানিয়েছি, যা কোনো রকম বিদ্যুৎ ছাড়া কাজ করতে পারে। মরুভূমি, দারিদ্র্যপীড়িত এলাকা বা গ্রামে যেখানে সৌরপ্যানেলও মেলে না, সেখানেও এটি চালানো যাবে।”
তারা এখন এই প্রযুক্তিকে বড় পরিসরে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছেন, যাতে একটি পরিবার বা এমনকি একটি গ্রামের পানির প্রয়োজন মেটানো যায়।
মুমু ২