ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

শিশুশ্রম প্রতিরোধে নৈশ বিদ্যালয় ভূমিকা রাখবে, চালুর দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) 

প্রকাশিত: ১৭:১৩, ১৯ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৭:১৬, ১৯ জুন ২০২৫

শিশুশ্রম প্রতিরোধে নৈশ বিদ্যালয় ভূমিকা রাখবে, চালুর দাবি

“শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশুদের জন্য নৈশ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে, যেন শিশুরা কাজের শেষে হলেও পড়ালেখা করতে পারে। নৈশ বিদ্যালয় চালু করা হলে তা শিশুশ্রম প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন তাহিরপুর এপি’র উদ্যোগে এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ দাবি জানান।

এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল— “স্বপ্নের ডানায় ভর করি, শিশুশ্রমের শৃঙ্খল ছিঁড়ি, এগিয়ে চলি দৃপ্ত পায়ে, আশার আগুন বুকে জ্বালি।”

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুর ১২টায় উপজেলার বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে দিবসটি উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বাদাঘাট বাজারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।

বক্তারা বলেন, “হঠাৎ করেই শিশুশ্রম নির্মূল করা সম্ভব নয়। শিশুশ্রম কমাতে সমাজে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। যারা ইতোমধ্যে শিশুশ্রমে জড়িয়ে পড়েছে, তাদের সারাদিন কাজ না করিয়ে দিনের অর্ধেক সময় কাজ করানো যেতে পারে। বাকি অর্ধেক সময় যেন তারা স্কুলে গিয়ে পড়ালেখা করতে পারে—তখনই সে শিক্ষার আলো দেখতে পারবে।”

ওয়ার্ল্ড ভিশন তাহিরপুর এপি’র ম্যানেজার সেবাস্টিন আরেং বলেন, “শিশুশ্রমকে বাংলাদেশ সরকারসহ আন্তর্জাতিকভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। বিশেষ করে ১৪ বছরের নিচে শিশুদের দোকান বা অন্য কোনো কাজে নিয়োগ দেওয়া আইনগতভাবেও নিষিদ্ধ। আপনার প্রতিষ্ঠানে যদি শিশু শ্রমিক থেকে থাকে, তাকে বলুন—‘তুমি স্কুলে যাও, তারপর ফিরে এসে কাজ কর।’ এতে তার জীবনে পরিবর্তন আসতে পারে। এটি সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও আমাদের দায়িত্ব।”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা ভাবুন, কীভাবে তাহিরপুরে শিশুশ্রম কমানো যায়, যাতে একটি প্রজন্ম ধ্বংসের পথে না যায়।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাদাঘাট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম শিকদার এবং সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রোগ্রাম অফিসার মানিক লাল সরকার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ধানু, বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ।

ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিল্লাল হোসেন, আব্দুর রউফ, মুখলেছুর রহমান, গণেশ তালুকদার, সারোয়ার ইবনে গিয়াস, আবুল ফজল, আবুল কাসেম প্রমুখ।

ওয়ার্ল্ড ভিশন তাহিরপুর এপি’র পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন এডভোকেসি অফিসার ব্রিজিতা রেমিলা, প্রোগ্রাম অফিসার টুকি চাম্বুগং, স্পন্সরশিপ ফ্যাসিলিটেটর টাইফুন মিয়া।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের তথ্যমতে, তাহিরপুর উপজেলায় এক হাজারের বেশি শিশু বিভিন্ন শ্রমে নিয়োজিত। এর মধ্যে শুধু বাদাঘাট বাজার ও আশপাশে রয়েছে প্রায় ৪৬০ জন শিশুশ্রমিক। তাদের বেশির ভাগ কাজ করে হোটেল-রেস্তোরাঁ ও অটোরিকশায়। এছাড়া নদীকেন্দ্রিক বালু-পাথর উত্তোলনের কাজেও অনেক শিশু যুক্ত রয়েছে।

সজিব

×