
ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পিনলঞ্চ তৈরি করেছে এক অভিনব প্রযুক্তি—বিস্তৃত সেন্ট্রিফিউজাল ক্যানন, যার মাধ্যমে শত শত পাতলা (প্যানকেক সদৃশ) মাইক্রোস্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। এ প্রযুক্তিতে কোন রকেট প্রয়োজন হয় না, বরং একটি বিশাল ঘূর্ণন-চেম্বারে স্যাটেলাইট ঘুরিয়ে ঘণ্টায় ৫,০০০ মাইল গতিতে আকাশে নিক্ষেপ করা হয়।
“মেরিডিয়ান স্পেস” প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা
স্পিনলঞ্চের প্রথম মিশন "মেরিডিয়ান স্পেস কনস্টেলেশন"—যার মাধ্যমে আগামী বছরই একসাথে শতাধিক মাইক্রোস্যাটেলাইট পাঠানো হবে লো-আর্থ অরবিটে (LEO)। প্রতিটি স্যাটেলাইটের ব্যাস ৭.৫ ফুট এবং ওজন প্রায় ১৫৪ পাউন্ড। এগুলো “লঞ্চ বাস” নামক একটি স্ট্রাকচারে পরপর স্তরে সাজানো থাকে, যা ওজন কমাতে এবং একসাথে বহু স্যাটেলাইট পাঠাতে সাহায্য করে।
সাফল্যের পথে প্রযুক্তি
নিউ মেক্সিকোতে ইতিমধ্যেই ১০টি সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সম্পন্ন করেছে স্পিনলঞ্চ। তাদের সাবঅরবিটাল অ্যাকসেলারেটর এখনো পর্যন্ত পরীক্ষিত হলেও ভবিষ্যতে তারা বৃহত্তর অরবিটাল অ্যাকসেলারেটর নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে—যার মাধ্যমে প্রতিদিন পাঁচটি বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণ সম্ভব হবে।
স্পেসএক্সকে চ্যালেঞ্জ
স্পিনলঞ্চের এই প্রযুক্তি স্পেসএক্স, ব্লু অরিজিনের মতো প্রতিষ্ঠিত মহাকাশ সংস্থাগুলোর আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। স্পিনলঞ্চের লক্ষ্য হচ্ছে—কম খরচে, দ্রুতগতিতে, পরিবেশবান্ধব উপায়ে যোগাযোগ সেবা বিস্তার করা, যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্যও মহাকাশে প্রবেশ সহজতর হয়।
ঝুঁকি ও ভবিষ্যৎ ভাবনা
যদিও এই প্রযুক্তি আশাব্যঞ্জক, তবে একসাথে এত বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ লো-আর্থ অরবিটে সংঘর্ষ, আলোকদূষণ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। এছাড়া রি-এন্ট্রির সময় কিছু স্যাটেলাইট পরিবেশে ক্ষতিকর পদার্থ ছাড়তে পারে। এসব দিক বিবেচনায় রেখে টেকসই ও দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।
স্পিনলঞ্চের আসন্ন উৎক্ষেপণ সফল হলে এটি মহাকাশ অভিযানে একটি নতুন মাইলফলক স্থাপন করবে। স্বল্প খরচে, দ্রুত এবং সবুজ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহাকাশে প্রবেশ এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ হবে। তবে প্রশ্ন রয়ে যায়—এই টেকসই ভবিষ্যতের পথে গোটা শিল্প কীভাবে নিজেদের খাপ খাওয়াবে এবং ঝুঁকিগুলো কীভাবে সামাল দেবে?
সূত্রঃ sustainability-times.com
নোভা