
ছবিঃ জনকণ্ঠ
নড়াইলের ইতিহাসে স্মরণীয় একটি দিন হয়ে থাকবে ২০২৫ সালের ১১ জুন। কালিয়া উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভাটি হয়ে উঠেছিল এক বিশাল জনসমাবেশে পরিণত। বৈরী আবহাওয়ার তোয়াক্কা না করে হাজারো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে।
বিকেলবেলা শুরু হওয়া এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয় কালিয়া উপজেলা ডাকবাংলো চত্বরে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা ও উপজেলার শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। স্থানীয় জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে এক অনন্য মাত্রায় নিয়ে যায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য ও নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন,"শহীদ জিয়া কেবল একজন রাষ্ট্রপতি ছিলেন না, তিনি ছিলেন স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতীক। তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ আজও আমাদের প্রেরণা যোগায়।"
প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মনিরুল ইসলাম। তিনি শহীদ জিয়ার রাজনৈতিক দর্শনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন,"জিয়া সাহেবের নীতিনির্ধারণ ও রাষ্ট্রচালনার কৌশল আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য পাঠ্য হওয়া উচিত। তিনি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গণতন্ত্রের আলো ছড়িয়েছেন।"
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন: জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মাহবুব মোর্শেদ জাপল, নড়াইল সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুস্তাফিজুর রহমান আলেক, লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহাদুজ্জামান বাটু,সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম,কালিয়া উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি আসজাদুর রহমান মিঠু,নড়াইল সদর পৌর বিএনপির সভাপতি তেলায়েত হোসেন বাবু,এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পৌর বিএনপির সভাপতি শেখ সেলিম হোসেন, এবং পরিচালনায় ছিলেন কালিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স.ম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু। তাঁদের ব্যবস্থাপনা অনুষ্ঠানটিকে সুসজ্জিত করে তোলে।
তাঁরা বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন সময়ের এক সাহসী যোদ্ধা, যিনি নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন তিনি কেবল নেতা নন, এক জননেতা।
বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে বলেন,"নির্বাচনের সময় নড়াইল-১ ও নড়াইল-২ আসনে হঠাৎ করে অতিথি পাখির আগমন বাড়ে। কিন্তু জনগণ এখন সচেতন। তারা এসব অতিথি পাখিদের আর দেখতে চায় না।"
সভা শেষে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন নেতৃবৃন্দ ও হাজারো উপস্থিত মানুষ। সবার মুখে ছিল একটিই প্রার্থনা—“আল্লাহ শহীদ জিয়ার আত্মাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।”
এই আলোচনা সভা কেবল একটি স্মরণসভা ছিল না, বরং তা হয়ে উঠেছিল একটি রাজনৈতিক বার্তা। বক্তারা সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানান শহীদ জিয়ার আদর্শ অনুসরণ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশের স্বার্থে একসাথে কাজ করার।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মরণে নড়াইলে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভা ছিল একটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান, যা শুধু স্মৃতিচারণ নয়, বরং রাজনৈতিক প্রেরণার উৎস হিসেবেও কাজ করেছে। নেতাকর্মীদের মুখে একটাই প্রতিজ্ঞা—“শহীদ জিয়ার আদর্শে আমরা চলব, তাঁর দেখানো পথেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব।”
আলীম