
ব্যস্ত শহরের ক্লান্তিকর জীবন থেকে একটু নিঃশ্বাস নিতে গত সপ্তাহে আমি গিয়েছিলাম সিলেটের জাফলং। এটি ছিল আমার বহুদিনের স্বপ্ন সরাসরি মেঘালয় পাহাড়ের কোলে দাঁড়িয়ে স্বচ্ছ নদীর জলে পা ডুবিয়ে সময় কাটানো। বাস্তবে এসে মনে হলো, ছবির চেয়েও অনেক বেশি সুন্দর জাফলং। ভোরবেলা সিলেট শহর থেকে রওনা দিয়েছিলাম। গাড়ির জানালা দিয়ে যখন চা-বাগান পেরিয়ে যাচ্ছিলাম, মনে হচ্ছিল প্রকৃতি যেন সবুজ গালিচা বিছিয়ে দিয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর পৌঁছলাম জাফলং। সেখানে নেমেই চোখে পড়ল ডাউকি নদীর স্বচ্ছ পানি, নিচের পাথরগুলো পরিষ্কার দেখা যায় জলের নিচে যেন আরেকটা জগৎ। ছোট ছোট নৌকায় চড়ে নদী পার হলাম। এক পাশে পাহাড়, অন্য পাশে বালু তোলা শ্রমিকদের জীবন। নদীর জলে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির নৈঃশব্দ আমাকে অভিভূত করেছিল। মনে হচ্ছিল, সময় থেমে গেছে। সেদিন দুপুরে স্থানীয় একটি দোকানে খাসির মাংস আর ডাল-ভাত খেয়ে আরও একবার নেমেছিলাম জলের কাছে। পাথরের ওপর বসে সূর্য ডোবার দৃশ্য দেখছিলাম। তখন মনে হলো, জীবনের সব সমস্যার সমাধান হয়তো নেই, কিন্তু এই নির্জনতায় কিছুটা শান্তি পাওয়া যায়।
জাফলং শুধু ঘোরার জায়গা নয়, এটি এক অনুভবের নাম। পাহাড়, নদী, মেঘ আর পাথরের মাঝে নিজেকে নতুন করে চিনে নেওয়ার জায়গা। ফিরে এসে মনে হয়েছে, জীবনের চাপে মাঝে মাঝে থেমে গিয়ে প্রকৃতিকে ছুঁয়ে দেখা জরুরি।
লালমাই সরকারি কলেজ, কুমিল্লা থেকে
প্যানেল