ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

হাওড়ের রূপমাধুরি

শ্যামল চৌধুরী

প্রকাশিত: ১৮:০১, ১৮ জুন ২০২৫

হাওড়ের রূপমাধুরি

মানুষ স্বভাবতই ভ্রমণপিয়াসী। অজানাকে জানা, অদেখাকে দেখার আগ্রহ মানুষের স্বভাবজাত। তাই একটু সুযোগ পেলেই মানুষ আনন্দ ভ্রমণে মেতে ওঠে। একঘেঁয়ে জীবনের ঘোর কাটাতে ভ্রমণবিলাসী হয়ে উঠতে চায়। কর্মজীবী মানুষ একটু ছুটি, অবসর পেলেই ভ্রমণ করতে চায়। যারা সরকারি, আধাসরকারী,  বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তারাও একটু ছুটি  পেলেই কোনো না কোনো জায়গায় ভ্রমণে যেতে চায়। তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ হলো ঈদের ছুটি। এবারের ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি অনেকের জন্য ভ্রমণের মহাসুযোগ করে দেয়। যে যার যার মতো করে বিভিন্ন স্পটে ঘুরে বেড়ায়। আমি এ সুযোগ হাতছাড়া করিনি। কয়েক বন্ধু মিলে ভ্রমণের জন্য বেছে নিই হাওড়কে।  নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা ডিংগাপোতা হাওড়কে। দিনক্ষণ ঠিক করে ট্রলার করে বেরিয়ে পড়লাম। খাবার দাবার সঙ্গে নিলাম। আমরা ছইয়ের ওপর থেকে হাওরের রূপমাধুরী অবলোকন করে এগিয়ে চললাম। চারদিকে অথই পানি আর পানি। মাঝে মাঝে হিজল করচের গাছগুলো যেন গলাডুবা দৃশ্য অতি মনোহর। মৃদুমন্দ বাতাসে ছোট ছোট ঊর্মিদলের ছলাৎছলাৎ শব্দ হাওড় ছাড়া আর কোথায় মিলে। মাঝে মাঝে পানকৌড়ির ডুব সাঁতার, সাদা বকের সারির উড়াল আমাদের নিয়ে যায় সৌন্দর্যের অমরাবতীতে। হাওড়ের মাঝে মাঝে রয়েছে বসতি। মনে হয় যেন জলদেবতা আপন হাতে ধরে রেখেছে। দেখতে দেখতে আমরা ধনু নদের তীরবর্তী গাগলাজুর ঘাটে ভিড়লাম। এখান থেকে ধনু নদের দৃশ্য উপভোগ করলাম। বালি, পাথর বোঝাই করে সারি সারি কার্গো চলছে ধনুর বুক চিরে। ইতোমধ্যে দুপুরের ভোজ সারলাম। বিশ্রাম  শেষে  বিকাল গড়ালো। ফেরার প্রহর ঘনিয়ে এলো। ট্রলার ছাড়লো। ধীরে ধীরে সূর্যদেব পাটে নামছেন। পশ্চিম আকাশে সিঁদুর রাগে থালাসদৃশ সূর্যদেব যেন ডিংগাপোতার অথই নীরে ডুবে গেলেন। এ মনকাড়া দৃশ্য আমরা অভিভূত। ধীরে ধীরে আকাশে উঁকি দিচ্ছেন চন্দ্রদেব। চন্দ্রের কিরণ রশ্মির ছটায় ডিংগাপোতার জলরাশি যেন ঝিলমিল করছে। ডিঙ্গাপোতা হাওড়ের মায়াবী রূপমাধুরী দেখতে দেখতে আমরা ফিরে এলাম আপন ঘাটে। এমন রোমাঞ্চকর, ডিংগাপোতা হাওড় ভ্রমণ স্মৃতিপটে আঁকা থাকবে দীর্ঘকাল।

মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা থেকে

প্যানেল

×