ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জাপানে কর্মসংস্থান

প্রকাশিত: ১৯:২৫, ৩১ মে ২০২৫

জাপানে কর্মসংস্থান

জাপান বাংলাদেশের পরীক্ষিত, ঘনিষ্ঠ ও অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী বন্ধুরাষ্ট্র। স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপানের অবদান অনস্বীকার্য। বর্তমানে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। জাপান বাংলাদেশের শীর্ষ পাঁচটি রপ্তানি গন্তব্যের একটি। জাপান বর্তমানে শ্রমিক সংকটের মুখোমুখি। এই সংকট মোকাবিলায় তারা বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে আগ্রহী। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে জাপান বাংলাদেশ থেকে এক লাখ শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। জাপান সফরত অবস্থায় এই তথ্য জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 
জাপান সরকার গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৯০০ জনের বেশি কর্মী নিয়োগ করেছে। এছাড়া, জাপান সরকারের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ১৪টি খাতে দক্ষ কর্মীদের জন্য ভিসার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যাদের মধ্যে নার্সিং, নির্মাণ, কৃষি, রেস্টুরেন্ট, ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল, মৎস্য, এভিয়েশন, জাহাজ নির্মাণ, সেবা, খাদ্য ও পানীয়, বিল্ডিং ক্লিনিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনারি এবং ম্যাটেরিয়ালস প্রেসিং খাত অন্তর্ভুক্ত। তবে জাপানে কাজ করতে ইচ্ছুক কর্মীদের জন্য জাপানি ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন। নতুন ভিসা নীতিমালার আওতায় কর্মীদের জাপানি ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে, যেমন- নার্সিং খাতে ভাষা শিক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, জাপান-বাংলাদেশ গ্লোবাল নার্সিং কলেজ স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশি নার্সদের জন্য প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে। এই কলেজে জাপানি ভাষা শিক্ষা কেন্দ্রসহ ২০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে, যা বাংলাদেশি নার্সদের জাপানে কর্মসংস্থানের পথ সুগম করবে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে, যা ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। 
সম্প্রতি বাংলাদেশে বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এবারের জাপান সফরে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতা সংক্রান্ত ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। তাছাড়া বাজেট সহায়তা, রেলপথ উন্নয়ন ও অনুদান হিসেবে বাংলাদেশকে ১০৬ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার দেবে জাপান। জাইকা, জেট্রোসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার মাধ্যমে জাপান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও কারিগরি উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রেখে চলেছে। আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি ও সমুদ্রসম্পদ আহরণে জাপানের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। জাপানের সহযোগিতায় এভাবেই আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে পারি। জাপান-বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্ব ও আস্থার। বন্ধুত্ব, বিশ্বাস ও আস্থার এই অংশীদারিত্বকে আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক আরও প্রসারিত হবে বলেই প্রত্যাশা।

প্যানেল

×