ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদুল ফিতর

প্রকাশিত: ২০:৪২, ৮ এপ্রিল ২০২৪

ঈদুল ফিতর

সম্পাদকীয়

পবিত্র রমজানের শেষে ঈদুল ফিতর এসেছে সবার জন্য আনন্দের বার্তা নিয়ে। জাতীয় ঈদগাহসহ দেশের সর্বত্র নির্ধারিত স্থানীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের জামাত। ঈদুল ফিতর ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্যই বয়ে আনুক সুনির্মল এক আনন্দবার্তা! ঈদুল ফিতর মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আনন্দ উৎসব। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে খুশির এই উপলক্ষটি। ঘরে ঘরে, জনে জনে আনন্দ ও খুশির বার্তা বয়ে আনে ঈদ। দিনটি সৌভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা ও ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলকে এক কাতারে শামিল করার চেতনায় করে উজ্জীবিত। কল্যাণের পথে ত্যাগ ও তিতিক্ষার মূলমন্ত্রে দীক্ষিত করে।

ঈদের আগে রোজার একটি মাস সংযম ও আত্মত্যাগের মাস। রোজার কঠোর অনুশীলন ব্যক্তিগত আত্মশুদ্ধি এবং গরিব-দুঃখী-অনাহারীদের কষ্ট অনুভবের প্রেরণা দেয়। এ সময় গরিব-দুস্থদের ঈদের আনন্দে শরিক করার জন্য রয়েছে ফিতরা ও জাকাতের ব্যবস্থা, যা বিত্তবান প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অবশ্য প্রদেয়। 
নামাজের ভেতর দিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়। নতুন পোশাক পরে সকালে ঈদগাহে নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। ধনী-গরিব সবাই এই দিনে মেতে ওঠে আনন্দ উৎসবে। ঈদুল ফিতরের মূল তাৎপর্য বিভেদমুক্ত জীবনের উপলব্ধি। ভুল-ভ্রান্তি, পাপ-পঙ্কিলতা মানুষের জীবনে কমবেশি আসে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়। পরম করুণাময় আল্লাহ্ চান মানুষ পাপ ও বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে আসুক সৎপথে। সম্প্রীতির আনন্দধারায় সিক্ত হয়ে উন্নত জীবন লাভ করুক। ঈদুল ফিতর মানুষকে এই শিক্ষা দেয়। 
দিবসটির উৎসব তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে সমাজের ধনী-গরিবের সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার মধ্য দিয়ে। শ্রেণিবৈষম্য বিসর্জনের মধ্য দিয়েই এ আনন্দ হয়ে ওঠে সার্থক। এবার অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদ উদযাপিত হবে বলে আশা করা যায়। দীর্ঘ যাত্রাপথের ভোগান্তি, গরমের ক্লান্তি আর কষ্টের পরও আপনজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার অনুভূতিই আলাদা। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের দুর্ভোগ কমেছে বহুলাংশে।

ঈদ বিভেদ-বৈষম্যহীন, ভ্রাতৃচেতনায় ঋদ্ধ এক নির্মল আনন্দ-উৎসব-বিনোদনের উপলক্ষ। এই উৎসবের দিনে সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে হবে আনন্দ। রমজান আমাদের চিত্তশুদ্ধির যে শিক্ষা দিয়েছে, সেই শিক্ষার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শান্তি ও শ্রেয়বোধের চেতনায় সুস্থিত হতে হবে। ঈদুল ফিতর উদযাপনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব সকল প্রকার হিংসা, যুদ্ধ, হানাহানিমুক্ত হোক। দূর হোক জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসের ভীতি।

সকল শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যরে বন্ধন হোক সুদৃঢ়। সবার ওপর বর্ষিত হোক মহান আল্লাহতায়ালার অশেষ রহমত ও শান্তিকল্যাণ। আনন্দে ভরে উঠুক জীবনের প্রতিটি দিন- এই প্রত্যাশায় ঈদ মোবারক! সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।

×