ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

স্মার্টফোন আসক্তি ॥ ধ্বংস হচ্ছে একটি প্রজন্ম

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২১:৪৮, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২

স্মার্টফোন আসক্তি ॥ ধ্বংস হচ্ছে একটি প্রজন্ম

.

নবম শ্রেণির ছাত্র রাতুল। লেখাপড়ায় মন নেই। ক্লাসের পরীক্ষায় কোনো রকমে পাস করছে। শিক্ষকদের কাছে রাতুল অমনোযোগী ছাত্র। প্রাথমিক স্কুলে সে ক্লাসে ফার্স্ট হতো। লেখাপড়ায় মনোযোগী ছিল। পড়ার জন্য বাবা-মাকে তাগাদা দিতে হতো না। ক্লাসের পড়া তৈরি কিংবা স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ ছিল নিজ থেকেই। মাত্র কয়েক বছরে রাতুল বদলে গেছে। তার স্বভাবে পরিবর্তন এসেছে। চঞ্চল রাতুল এখন খুব কম কথা বলে। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়পরিজনের সঙ্গেও মিশতে চায় না। ক্লাসের পড়া তৈরিতে তাগাদা দিতে হয়। নানা অজুহাতে স্কুলে না যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। তার প্রিয় সঙ্গী স্মার্টফোন।
বাবা মা একদিন শখ করে শিশু রাতুলের হাতে তুলে দিয়েছিলেন স্মার্টফোন। ফোনের অ্যাপ্লিকেশনগুলোও শিখিয়ে দিয়েছিলেন যত্ন করে। মেধাবী রাতুল খুব অল্প সময়েই অ্যাপ্লিকেশনগুলো আয়ত্ত করে ফেলে। ছোট্ট রাতুলের এই সাফল্যে সেদিন বাবা মা কিছুটা হলেও গর্ববোধ করেছিলেন। সেদিন তারা বুঝতে পারেননি ধ্বংস হওয়ার অস্ত্র তারা নিজ হাতেই তুলে দিয়েছেন ছেলের হাতে। ধীরে ধীরে রাতুল আসক্ত হয়ে পড়ে স্মার্টফোনে। এরপর থেকেই বদলে যেতে থাকে রাতুল। তাকে ফেরানোর আর কোনো পথ খুঁজে পায় না বাবা-মা। কয়েকবার চেষ্টা করা হয়েছে। কেড়ে নেওয়া হয়েছে তার ফোন। এতে হিতে বিপরীত হয়েছে। তৈরি হয়েছে বিপথগামী হয়ে পড়ার আশঙ্কা। এক পর্যায়ে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ মেনে নিয়েছেন বাবা-মা। এমন রাতুল এখন ঘরে ঘরে।
শুরু হয় শখ থেকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিকতাও শিশুদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিতে বাধ্য হন বাবা মা। শিশুর মন ভোলাতে, কখনো সন্তানের আবদারে, কখনোবা আশপাশের অন্য শিশুদের হাতে মোবাইল থাকার কারণে। সবার ক্ষেত্রে ফল একটিই, সন্তানের স্মার্টফোনে আসক্তি। যে শিশুর এক সময় স্বপ্ন  ছিল বড় হয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়া কিংবা বিদেশে গিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা, কৈশোর পার না হতেই তার স্বপ্ন ভেঙ্গে যাচ্ছে। লেখাপড়ার মূল স্রোত থেকে ছিটকে পড়ে ডুবে যাচ্ছে গভীর হতাশায়, হয়ে যাচ্ছে বিপথগামী। প্রায় প্রতিটি ঘরের চিত্রই এক। সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত অভিভাবক। একটি প্রজন্মই যেন ধ্বংস হতে বসেছে এই আসক্তির কারণে।
বিষয়টি নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। আলোচনা, সেমিনার কিংবা টকশো হয়েছে অনেক। শিশুদের স্মার্টফোন আসক্তি থেকে মুক্তির জন্য নানা পরামর্শ এসেছে। ফল হয়নি কিছুই। প্রযুক্তির এই যুগে স্মার্টফোনবিহীন জীবন যেন কেউ কল্পনাই করতে পারে না। শিশু, কিশোর, যুবা, বৃদ্ধ সবারই চাই স্মার্টফোন। এক ঘরে বাবা-মা সন্তানসহ পরিবারের সব সদস্যের একযোগে স্মার্টফোনের দিকে গভীর মনোযোগের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে। তবুও সচেতন হচ্ছে না কেউ। এই আসক্তি আমাদের কোন্ দিকে নিয়ে যাচ্ছে তা ভাবছে না কেউ। সচেতন হওয়া দূরের কথা কার ফোনে কতটা উন্নত প্রযুক্তি সংযুক্ত করা যায়, এ নিয়েই আলোচনা হয় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে।

কিভাবে তৈরি হয় আসক্তি

স্মার্টফোন আসক্তি সৃষ্টিকারী একটি যন্ত্র। এটি এমনভাবেই বানানো হয় যেন সব সময় এটি নাড়াচাড়া করতে ইচ্ছে করে। ফোনের সঙ্গে ইন্টারনেট যুক্ত হয়ে আসক্তির উপাদান বাড়িয়ে দেয়। ইন্টারনেটে নানা ধরনের গেমিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টিকটকসহ আরও বিনোদনের উপাদান। এগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকা- জড়িত। এদের লাইক বা শেয়ারের ওপর নির্ভর করে অর্থপ্রাপ্তি। এ কারণে মানুষের আসক্তি তৈরির মতো করেই এগুলো তৈরি হয়। এগুলো শুধু শিশু নয়, যে কোনো মানুষকেই আকর্ষণ করে। একবার দেখতে শুরু করলে এক ধরনের নেশা তৈরি হয়। মানুষকে টেনে নিয়ে যায় আসক্তির দিকে। এই আসক্তি মানুষের মনোজগতে মারাত্মক প্রভাব তৈরি করে। এমন নির্ভরশীলতা তৈরি করে যা থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন। কেউ চাইলেও অবচেতন মন তাতে বাধা দেয়। মাদকাসক্তির মতোই আসক্তি তৈরি করছে স্মার্টফোন।
এ আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সময়সাপেক্ষ এবং কঠোর সদিচ্ছা প্রয়োজন হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ হয়। সাধারণত স্তন্যপায়ী প্রাণিদের মস্তিষ্কেই ডোপামিন নিঃসরণ হয়। মানুষের মধ্যে এর পরিমাণ অনেক বেশি। ডোপামিন এক ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার। এটি মানুষের মধ্যে নতুন কিছু পাওয়া বা দেখার আকাক্সক্ষা তৈরি করে। ঘন ঘন স্মার্টফোনের দিকে তাকানো এই আকক্সক্ষার কারণেই ঘটে থাকে। ইন্টারনেটে পাওয়া নতুন নতুন উপাদান এই আকাক্সক্ষাকে আরও প্রবল করছে।

স্মার্টফোনে কী ক্ষতি হয়

তারবিহীন ক্ষুদ্র এই যন্ত্রটি মানুষের অতিপ্রয়োজনীয় এবং যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলেও এর ক্ষতি সম্পর্কে আমরা সচেতন নই। শুধু আসক্তি নয়, এই আধুনিক যন্ত্রটির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে কত ধরনের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানি। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিন দিন প্রযুক্তির উৎকর্ষের মাধ্যমে স্মার্টফোনের সঙ্গে আমরা সবচেয়ে বেশি সম্পর্কিত হয়ে পড়ছি। আমাদের দৈনন্দিন কাজের শুরুটাই হয় মোবাইলে এলার্মের মাধ্যমে। দিনশেষে ঘুমোতে যাওয়ার সময়ও ফোনটি হয় আমাদের নিত্যসঙ্গী। দিনের একটা উল্লেখযোগ্য অংশও আমরা মোবাইল নিয়ে কাটাই। সেটা হতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভিডিও স্ট্রিমিং, অডিও মিউজিক শোনা, ই-পেপার পড়া, সময় দেখা, গেম খেলা কিংবা কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা। গবেষণা বলছে, মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে প্রত্যক্ষভাবে যেসব শারীরিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে, এর মধ্যে রয়েছে ঘাড় ব্যথা, চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া, কানে কম শোনা, অস্থিসন্ধির ক্ষতি, শুক্রাণু কমে যাওয়া ইত্যাদি। মানসিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে নমোফোবিয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, চিন্তা ও স্মরণশক্তি কমে যাওয়া এবং পর্ণো আসক্তি।
স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে ঘুমের সমস্যা হয় সবচেয়ে বেশি। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির তথ্যমতে, স্মার্টফোন ব্রেন, মাথা বা গলার টিউমারের কারণ হতে পারে। হার্টের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে মারাত্মকভাবে। দীর্ঘসময় মাথা ঝুঁকে বসে মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকায় ঘাড় বা মেরুদন্ডে ব্যথা হয়ে যায়। অনেক সময় মোবাইল ব্যবহারের সঠিক দূরত্ব ও বডি পজিশন ঠিক রাখা সম্ভব হয় না। এজন্য চোখেরও ক্ষতি হয়। দীর্ঘ সময় ধরে ফোন ব্যবহারের কারণে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে পারে। মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে ফোনের নীলাভ আলোয় চোখের রেটিনায় দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত তৈরি করতে পারে। এটি অন্ধত্বের কারণ হতে পারে বলেও চক্ষু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
স্মার্টফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বলা, উচ্চ আওয়াজে গান শোনা এবং কানে হেডফোন গুঁজে রাখার মাধ্যমে দেখা দিতে পারে শ্রবণশক্তি হ্রাস হওয়ার মতো গুরুতর সমস্যা।  দৈনিক ২-৩ ঘণ্টার বেশি মোবাইল ব্যবহারকারীদের ৩-৫ বছরের মধ্যে আংশিক বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া কানে হেডফোন লাগিয়ে যত্রতত্র চলাফেরায় প্রতিনিয়ত অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ একজন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর স্ক্রিনে ট্যাপ, ক্লিক ও সোয়াইপের পরিমাণ গড়ে ২ হাজার ৬১৭ বার এবং সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৪২৭ বার। দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনে টাইপিংয়ের ফলে আঙুলের জয়েন্টে ব্যথা হয়। এর ফলে আর্থারাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বসার ভঙ্গি, কাঁধ ও কানের মাঝামাঝি ফোন রেখে কথা বলা এবং অতিরিক্ত ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ মেসেজ টাইপিংয়ের কারণে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। গবেষণায় এমন তথ্যও প্রকাশিত হয়েছে, স্মার্টফোন থেকে নির্গত হওয়া হাই ফ্রিকোয়েন্সি ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন শরীরের কোষ ও পুরুষের প্রজননতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলছে। ফোনের ক্ষতিকর তরঙ্গ শুক্রাণুর ঘনত্ব কমানো ও পুরুষের বন্ধাত্বের কারণ হতে পারে বলে দাবি করছেন গবেষকরা।
স্মার্টফোন যেসব মানসিক সমস্যা তৈরি করে তার মধ্যে রয়েছে নোমোফোবিয়া। অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের ফলে মনের মধ্যে সব সময় মোবাইল আছে কিনা, নাকি হারিয়ে গেল এমন একটা ভয় তৈরি হয়। মনের উদ্বিগ্নতা থেকে আকস্মিক রিংটোন বা ভাইব্রেশন বেজে ওঠার শব্দ শুনতে পান অনেকে। তাদের কাছে মনে হয় কেউ বোধহয় কল করল বা কোনো নোটিফিকেশন এলো। তারা এই সমস্যার কথা বুঝতেও পারেন না। কারও কারও মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। একই সঙ্গে অস্থিরতা ও অমনোযোগিতা বৃদ্ধি পায়। নিজের অজান্তেই কারও সঙ্গে অশোভন আচরণ করে ফেলেন। স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে মানুষের ত্বরিত চিন্তাশক্তি কমে যায়। সৃজনশীল মেধা কমে যাওয়ার ফলে কোনো কিছুর উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা বিনষ্ট হয়ে যায়। গেমস ও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্তির ফলে শিশু-কিশোররা পানাহার ও দৈনন্দিন কাজকর্মে অমোনোযোগী হয়ে পড়ছে। লেখাপড়ায় মন বসাতে পারে না। তাদের মনে তৈরি হয় হতাশা। এক পর্যায়ে হাতাশা থেকে বিপথগামী হয়ে যেতে পারে। আরও দুই বছর আগে জাপানের ডকোমো ফাউন্ডেশন পাঁচটি দেশে জরিপ করে ৭০ শতাংশ শিশুর পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্নতার কারণ হিসেবে মোবাইল ফোনকে দায়ী করেছে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে পারিবারিক মূল্যবোধ বিনষ্ট ও মা-বাবার উপদেশ না মানার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
স্মার্টফোনের কারণে খুব কম বয়সেই শিশু-কিশোররা পার্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ‘মানুষের জন্য’ ফাউন্ডেশন এক গবেষণায় বলেছে, রাজধানীর ৭৭ শতাংশ স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে পর্নোগ্রাফি-আসক্তি তৈরি হয়েছে। যার ফলে তাদের মধ্যে বিকৃত যৌনাচারের প্রবণতা তৈরি হয়েছে আশঙ্কাজনক হারে। এতে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। এক সময় তৈরি হচ্ছে হতাশা। জড়িয়ে পড়ছে মাদকাসক্তির সঙ্গে। আত্মহননের ঘটনাও ঘটছে অহরহ।

পাদটিকা

আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির অন্যতম উদ্ভাবন এই স্মার্টফোন। এটি গোটা বিশ্বকে একটি মেলবন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। কেউ চাইলে বিশে^র যে কোনো প্রান্তের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে মুহূর্তের মধ্যে। সব তথ্য চলে এসেছে হাতের কাছে। এই প্রযুক্তিকে অস্বীকার বা অবহেলা করার সুযোগ নেই। শুধু নিশ্চিত করতে হবে এই সীমিত ব্যবহার। ভুলে গেলে চলবে না, যোগাযোগ স্থাপন ছাড়াও মানুষের দৈনন্দিন জীবনে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। এগুলো বাদ দিয়ে শুধু যোগাযোগ স্থাপন কিংবা বিনোদনের দিকে নজর দিলে জীবন অসম্পূর্ণ হয়ে যাবে। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের স্মার্টফোন আসক্তি থেকে দূরে রাখতে হবে যে কোনো মূল্যে। অভিভাবকের দায়িত্ব সন্তানদের সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে রাখা। নির্দিষ্ট বয়সের আগে কোনোভাবেই শিশুর হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়া যাবে না।

যারা আসক্ত হয়ে পড়েছে তাদেরকে কাউন্সিলিং করে ফিরাতে হবে। বাবা মা এবং পরিবারের লোকদের আরও বেশি সময় দিতে হবে। অবসর বিনোদন হিসেবে স্মার্টফোনের পরিবর্তে তাদেরকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া কিংবা গল্পের বই পড়তে উৎসাহিত করতে হবে। অনেক সময় শিশুর কান্না বা রাগ ভাঙ্গাতে অভিভাবকরা মোবাইলে কার্টুন বা গান চালিয়ে দেন। পরবর্তীতে সমস্যা প্রকট হয়ে দাঁড়ায়। এটি কিছুতেই করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, স্মার্টফোন আসক্তি রোধ করতে না পারলে আমাদের একটি প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। রাষ্ট্র, সমাজ বা পরিবারের জন্য বয়ে আনতে পারে ভয়ঙ্কর পরিণতি।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ

×