
ছবি: প্রতীকী
করোনার নতুন ধরণটি অমিক্রনের সাব-ভেরিয়েন্ট হওয়ায় এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এই ধরণটির প্রকৃতি বুঝতে আরও বেশি জিন বিশ্লেষণ বা জেনোম সিকোয়েন্সিং করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখনই একটি জরুরি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে টিকার সরবরাহ নিশ্চিত করার দিকেও নজর দিতে বলেছেন তারা। যদিও বর্তমানে দেশে করোনার টিকা সরবরাহ নেই এবং গত এক-দুই বছর ধরে নতুন করে টিকা প্রদানও হয়নি, তবে ভবিষ্যতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) নির্দেশ দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের পরামর্শ, বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে, বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। কারও জ্বর, ঠান্ডা, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হলে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের শরণ নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। চলতি বছরের এপ্রিলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩ জন, যা মে মাসে বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ জনে। জুন মাসের প্রথম ৯ দিনে ৪১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। প্রায় দেড় বছর পর করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
আইসিডিডিআরবি জানায়, এ বছরের সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে অমিক্রনের দুটি নতুন সাব-ভেরিয়েন্ট—XFJ এবং XFC—গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই ভ্যারিয়েন্টগুলো দ্রুত ছড়ায় এবং অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, কিছু ক্ষেত্রে এগুলো জটিল অবস্থারও সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অমিক্রনের এই নতুন ধরণে প্রোটিনের গঠন পরিবর্তিত হওয়ায় পূর্বের ভ্যাকসিন থেকে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি কার্যকরভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছে না। তাই শুধু পিসিআর বা অ্যান্টিজেন টেস্ট যথেষ্ট নয়, বরং জেনোম সিকোয়েন্সিং করেই ধরণটি শনাক্ত করা প্রয়োজন।
তারা আরও বলেন, সংক্রমণের মাত্রা বেশি হলে জটিলতা তৈরি হয়ে মৃত্যুও হতে পারে। এ কারণে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।
দেশে এখন পর্যন্ত ২০ লাখেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫০০ জনের। এখন সময় দ্রুত প্রস্তুতি নেওয়ার— স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী কম, মাঝারি ও উচ্চ সংক্রমণ পরিস্থিতির জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে দুইটি জিনিস গুরুত্বপূর্ণ— টিকা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/1Jj8JoCS0f0?si=fkTIhHj_9TqCgPJ-
এম.কে.