
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের কথা ভাবছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। এর মূল কারণ, রাজনৈতিক দলগুলোর নানামুখী চাপ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত না হওয়া। যদিও প্রধান উপদেষ্টা আশ্বাস দিয়েছেন যে, নির্বাচন ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে, রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষ করে বিএনপি, এতে আশ্বস্ত হতে পারছে না।
রাজনৈতিক দলগুলোর অসন্তোষ ও দাবি:
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ও রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের অভিযোগ, সরকার এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এরই মধ্যে বিএনপি কয়েকটি ইস্যুতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করেছে:
- ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথ: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে ইশরাক হোসেনের শপথের দাবিতে টানা আটদিন ধরে আন্দোলন চলে। ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষে আবারো আন্দোলন শুরু হয়েছে।
- উপদেষ্টাদের অব্যাহতি: বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের যে উপদেষ্টারা নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত, তাদের অব্যাহতি এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকেও অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
সেনাপ্রধানের বার্তা ও ড. ইউনূসের অবস্থান:
গত বুধবার (২১ মে) সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এক বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন। এই প্রেক্ষাপটেই বৃহস্পতিবার রাতে ড. ইউনূসের পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পরের দিন তার বিশেষ সহকারী জানান, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না।
পরে শনি ও রোববার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জানান, নির্বাচন আগামী জুন মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। তবে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবির কোনো প্রতিফলন এই বক্তব্যে নেই, যা বিএনপি'সহ অনেক দলকে অসন্তুষ্ট করেছে। বিএনপি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, ডিসেম্বরের মধ্যে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না হলে তাদের পক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হবে।
এই পরিস্থিতিতে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি'র মাঠে নামার সম্ভাবনা রয়েছে, যা অদূর ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করতে পারে।
সাব্বির