ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আন্দোলনের মুখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন, বিলুপ্ত হচ্ছে না এনবিআর

প্রকাশিত: ২২:৫২, ২২ মে ২০২৫

আন্দোলনের মুখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন, বিলুপ্ত হচ্ছে না এনবিআর

ছ‌বি: সংগৃহীত

টানা আন্দোলনের মুখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে পৃথক দুটি বিভাগ গঠনের উদ্যোগ থেকে সরে এসেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২২ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে এবং তা না হওয়া পর্যন্ত এনবিআরের বর্তমান কাঠামোই বহাল থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫” বাস্তবায়নের জন্য বহু পর্যায়ের প্রশাসনিক কাজ বাকি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের জন্য পৃথক সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি, পদ সৃজন, সচিব কমিটির অনুমোদন, এবং ‘অ্যালোকেশন অব বিজনেস’ নির্ধারণসহ একাধিক আইনি ও বিধিবিধানগত পরিবর্তনের প্রয়োজন—যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ।

এ অবস্থায় সরকার জানিয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখনই বিলুপ্ত হচ্ছে না। বরং এনবিআরের সব কার্যক্রম আগের মতোই চলবে এবং কাস্টমস ও কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা বিদ্যমান কাঠামোতেই কাজ করে যাবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের স্বার্থ সুরক্ষার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে পৃথকীকরণের কাঠামো গঠন করা হবে এবং এ বিষয়ে এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে অধ্যাদেশে সংশোধনী আনা হবে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিলুপ্তির কোনো নির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি, ফলে এনবিআর এখনও কার্যকরভাবে বহাল রয়েছে। মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, কাস্টমস ও কর ক্যাডারের কোনো পদ-পদবি কমানোর পরিকল্পনা সরকারের নেই। বরং সংস্কারের পর তাদের পদের সংখ্যা বাড়বে এবং পদোন্নতির সুযোগও বাড়বে।

এর আগে, ১২ মে রাতে এনবিআর বিলুপ্ত করে নতুন অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর প্রতিবাদে পরদিন থেকেই আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা কলমবিরতি, অবস্থানসহ টানা কর্মসূচি পালন করেন এবং দাবি জানান অধ্যাদেশ বাতিলের। যদিও প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে একাধিক বৈঠক হলেও সমাধান আসেনি।

বৃহস্পতিবার এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়। ওইদিন সারাদিনব্যাপী আলোচনা চলে অবসরপ্রাপ্ত দুই এনবিআর সদস্যের মধ্যস্থতায়। সরকারের পক্ষ থেকে সংগঠনের প্রস্তাব পুরোপুরি গ্রহণ করা হলেও, তারা শেষ মুহূর্তে কর্মসূচি প্রত্যাহার না করে কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

এ প্রেক্ষাপটে অর্থ মন্ত্রণালয় এক আহ্বানে বলে, রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে এবং অর্থবছরের শেষ সময়ে বাজেট কার্যক্রম ও রাজস্ব আহরণ নির্বিঘ্ন রাখতে এনবিআরের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অফিস সময়ে দপ্তরে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হতে হবে।

এম.কে.

×