ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এবার বাজারে ভারতীয় গরুর অনুপস্থিতি, হাঁফ ছেড়েছে খামারিরা

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ১৫ মে ২০২৫

এবার বাজারে ভারতীয় গরুর অনুপস্থিতি, হাঁফ ছেড়েছে খামারিরা

ছবি: সংগৃহীত।

কুরবানির ঈদ সামনে রেখে জয়পুরহাট জেলাজুড়ে জমে উঠেছে পশু প্রস্তুতির মহোৎসব। জেলার প্রায় ১৫ হাজার খামারে এবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ গরু। তবে আশাব্যঞ্জক বিষয় হলো—এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে মাঝারি আকৃতির গরুর চাহিদা বেশি। সেই অনুযায়ী উৎপাদনও করেছেন স্থানীয় খামারিরা।

জেলাজুড়ে এখন খামারে খামারে চলছে ক্রেতাদের আনাগোনা। অনেকেই হাটে না গিয়ে সরাসরি খামার থেকেই পছন্দের গরু কিনে নিচ্ছেন। অনেকে আবার খামারে গিয়ে গরু দেখে যাচ্ছেন, দাম শুনছেন, পরে ফিরে যাচ্ছেন পরিবারের সিদ্ধান্ত নিয়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা আগেভাগে গরু কিনে খামারেই রাখার ব্যবস্থা নিতে চান, তারাই এখন বেশি খামারে আসছেন।

খামারিরা জানিয়েছেন, বর্তমানে বাজার তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। অন্যান্য বছরের মতো ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশ এখনও দেখা যায়নি, ফলে স্থানীয় গরুর বাজার স্বাভাবিক রয়েছে। আগের বছরগুলোতে ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা গরু হাটে ঢুকলে লোকসানে পড়তে হতো স্থানীয় খামারিদের। তবে এবার সেই আশঙ্কা কিছুটা কম।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, ভারতীয় গরু যেন কোনোভাবেই বাজারে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারির কথাও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

তবে বড় আকৃতির গরু নিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। জয়পুরহাট সদর উপজেলার বিল্লা গ্রামের খামারি মিলন হোসেন গত চার বছর ধরে ফিজিয়ান জাতের একটি গরু লালনপালন করছেন। গত বছর গরুটির ওজন ছিল প্রায় ৩০ মণ। তখন তিনি গরুটি নিয়ে ঢাকায় গেলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে সেটি আবার ফিরিয়ে আনেন। বর্তমানে গরুটির ওজন ৩২ মণের বেশি হলেও এখনও বিক্রি করতে পারছেন না তিনি।

এ নিয়ে হতাশা থাকলেও প্রাণিসম্পদ বিভাগ খামারিদের উৎসাহ দিচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বড় গরুর দাম পেতে হলে অনলাইন প্রচার ও সরাসরি ঢাকার হাটে অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, অনেক বড় গরুর উপযুক্ত ক্রেতা শেষ মুহূর্তে বাজারে আসে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের।

চলতি বছরের কুরবানির পশুর বাজারে জয়পুরহাটের খামারিরা কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও বড় গরু বিক্রি নিয়ে রয়ে গেছে কিছু শঙ্কা। তবে সরকারের নজরদারি ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকলে তারা গত বছরের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন খামারিরা।

নুসরাত

×