
ছবি: সংগৃহীত
৩১ ডিসেম্বর শুধু বছরের শেষ দিন নয়; এটি বহুবছর ধরে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে এটি সাধারণ বছরে ৩৬৫তম দিন এবং অধিবর্ষে ৩৬৬তম দিন। একই সঙ্গে এটি নতুন বছরের প্রাক্কালে উদযাপনের দিন।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, বিভিন্ন সময়ে ৩১ ডিসেম্বর দিনটি বিশ্বজুড়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বহন করেছে। ১৯২৯ সালের এই দিনে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পথপ্রদর্শক জওহরলাল নেহরু ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ঘোষণা দেন, “পূর্ণ স্বাধীনতাই ভারতের লক্ষ্য।” এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতের সাহসী প্রতিবাদের এক যুগান্তকারী মুহূর্ত।
অন্যদিকে, ১৯৪২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়নের স্টালিনগ্রাদ যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শেষ হয়, যেখানে জার্মান বাহিনী চূড়ান্ত পরাজয় বরণ করে। এই বিজয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তির শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলতে বড় ভূমিকা রেখেছিল।
এশিয়ার প্রেক্ষাপটে, ১৯৪৮ সালের এই দিনটি বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে আছে। ঢাকার কার্জন হলে পূর্ব-পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষার গুরুত্ব ও ঐতিহ্য তুলে ধরে হৃদয়স্পর্শী ভাষণ দেন। এটি ভবিষ্যৎ ভাষা আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন করতে সহায়তা করেছিল।
৩১ ডিসেম্বর দিনটি আজও সারা বিশ্বে নতুন বছরের প্রস্তুতি এবং উদযাপনের জন্য উদ্দীপনা নিয়ে আসে। তবে, এই দিনটির ঐতিহাসিক গুরুত্বও স্মরণ করা জরুরি। এটি শুধুমাত্র একটি দিন নয়; এটি নতুন বছরের দিকে যাত্রার এক মাইলফলক এবং অতীতের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার দিন।
উল্লেখ্য, আগামী ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ঘোষণা করা হবে ‘প্রোক্লেমেশন অব রেভ্যুলেশন’ যা দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তনের সূচনা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। দেশব্যাপী এই প্রোক্লেমেশন নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। সমর্থকরা এটিকে ভবিষ্যৎ বদলানোর হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন, তবে বিরোধীদের মতে এটি জাতীয় ঐক্যে বিভক্তি তৈরি করতে পারে। ৩১ ডিসেম্বরের প্রোক্লেমেশন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে কিনা, তা দেখার অপেক্ষায় আছে পুরো জাতি।
তাবিব