ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সোয়াজিল্যান্ডে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত ব্যবসায়ীর লাশ দেশে এসেছে

প্রকাশিত: ১১:০০, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

সোয়াজিল্যান্ডে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত ব্যবসায়ীর লাশ দেশে এসেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আফ্রিকান দেশ সোয়াজিল্যান্ডে বাংলাদেশী দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত ব্যবসায়ী ইউসুফ মিয়ার মরদেহ ঢাকায় এসেছে। বুধবার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার মরদেহ গ্রহণ করেন স্বজনরা। এ সময় সেখানে ইউসুফের মরদেহ দেখে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়লে একহৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। নিহত ইউসুফের কফিন গাড়িতে তোলার সময় স্বজনরা এই নির্মম হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত চিহ্নিত খুনীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান। রাতেই তারা ফরিদপুরের গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। গত ১৫ ডিসেম্বর সোয়াজিল্যান্ডে প্রবাসীদের এক সভায় অতর্কিত হামলার শিকার হন ইউসুফ। তিনি বসে থাকার সময় তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মিলন ও লিটন ব্যাপারীর নেতৃত্বে ১০/১৫ বাংলাদেশী। তারা ইউসুফের পিঠে বিশালাকৃতির ধারাল ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে তিনি প্রাণ হারান। এ ঘটনায় তার ভাই জসিম উদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে ওখানকার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ লিটন ও মিলন ব্যাপারীকে আটক করে জেলে পাঠিয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে সে দেশের পুলিশ। তার বড় ভাই গিয়াস জানান, ফরিদপুরের কানাইপুরে আলহাজ সফিউল্লাহ মিয়ার সাত ছেলে ও এক মেয়ের একজন ইউসুফ মিয়া। ২০০১ সালে বি এ পাসের পর জীবিকার সন্ধানে অপর দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে যায় সুদূর সোয়াজিল্যান্ডে। সেখানে তারা ব্যবসা শুরু করে। স্বল্প সময়েই সাফল্য পায়। ওখানকার প্রবাসীদের মাঝেও তার প্রতি ছিল বেশ গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থা। সে প্রবাসীদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানে ওখানকার বাংলাদেশী দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। ঘটনার দিন কমিউনিটির একটি নির্বাচনী বৈঠকে বসার পর হঠাৎ মতবিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে অতর্কিতে পেছন থেকে তাকে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করে লিটন ও মিলন ব্যাপারী। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক প্রিটোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সাব্বির চৌধুরীর নজরে আনা হয়। নিহত ইউসুফের স্ত্রী, ৫ মাসের একটি ছেলে ও ১০ বছরের মেয়ে রয়েছে। তারা রবিবারই সোয়াজিল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছে। এ বিষয়ে গিয়াসউদ্দিন জানান, আটক খুনী মিলন ও লিটন ব্যাপারী ঢাকার দোহারের বাসিন্দা। তারা বাংলাদেশ থেকে আিফ্রকায় মানিলন্ডারিংয়ে জড়িত । এলাকায় তারা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবেও পরিচিত। সোয়াজিল্যান্ডে প্রবাসীদের মধ্যে প্রাধান্য বিস্তার ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িত। মূলত বিদেশের মাটিতেও তারা দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলে। তারা খুবই হিং¯্র প্রকৃতির। তাদের অপর সহযোগীদেরও আটকের জন্য পুলিশ খুঁজছে। সোয়াজিল্যান্ডপ্রবাসীরা এখন এই চক্রের বিরুদ্ধে মুখ খুুলছেন।
×